খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত শিউলিরা ডায়মন্ড হারবার, 30 নভেম্বর: উত্তরের হিমেল হাওয়া ও হালকা কুয়াশায় দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে শীতের আমেজ । আর শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কদর বেড়েছে খেজুর গাছের । কারণ এই মরশুমে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় খেজুরের রস ৷ দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার, জয়নগর, কুলতলি, কাকদ্বীপ, সাগর-সহ বিভিন্ন প্রান্তে চলছে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করার কাজ ৷ এরপর সেই রস থেকে তৈরি হচ্ছে গুড় ।
শীতের আবহে গ্রাম বাংলার অতিপ্রিয় খাবার হরেকরকমের পিঠে ও পায়েস । ঘরে ঘরে খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি হয় সেগুলি ৷ তাই লক্ষ্মীলাভের আশায় এখন থেকেই খেজুরের রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত এক শ্রেণির মানুষ । খেজুর গাছের রস ফুটিয়ে তৈরি হয় নলেন গুড় থেকে ঝোলা গুড় কিংবা পাটালিও । শীতের মরশুম শুরু হতেই বাড়ছে নলেন গুড়ের চাহিদা । তবে নলেন গুড় হাতে পেতে সময় আছে বলে দাবি অপরশ্রেণির শিউলিদের ৷ তার আগেই বাজার ছেঁয়েছে নকল নলেন গুড়ে ৷ কিন্তু এই গুড়ে চিনি মেশানো থাকায় তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না বলে জানাচ্ছেন শিউলিরা ৷
ডায়মন্ড হারবারের শিউলি শাহজাহান শেখ বলেন, "আমি 43 বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি ৷ সাধারণত শীতের মরশুম শুরু হতেই নলেন গুড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ কিন্তু এখন বাজারে নলেন হিসাবে যে গুড় বিক্রি হচ্ছে সেই গুড় আসল নয় ৷ সেই গুড় নকল । কিছু পরিমাণ গুড় ও চিনির মিশন করে অসাধু ব্যবসায়ীরা নলেন গুড় হিসাবে বাজারে বিক্রি করছে । আসল নলেন গুড় পেতে হলে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে । এখন মূলত খেজুর গাছগুলিকে চাচাছোলা করা হচ্ছে ৷ এরপর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হবে । সেই রসকে ফুটিয়ে তৈরি করা হবে নলেন গুড় ।"
জয়নগরের প্রসিদ্ধ মোয়া তৈরিতে এই গুড় ব্যবহার করা হয় । এছাড়াও নানারকম সুস্বাদু মিষ্টান্ন তৈরি করতে এই গুড় কাজে লাগে । বাজারে চাহিদা রয়েছে তবে এখন যোগান নেই । আর অল্প কিছুদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে নলেন গুড় । গ্রামের ঘরে ঘরে খেজুর রস আর গুড় দিয়ে নতুন পিঠা-পুলি ও পায়েস তৈরির ধুম পড়বে । আসন্ন পৌষ পার্বণ-পুস্না বা পিঠেপুলির উত্সবে এই খেজুর গুড় ও রস নতুন মাত্রা আনবে । চলছে তারই শেষ বেলার প্রস্তুতি ।
আরও পড়ুন:
- শীতের দেখা নেই, খেজুরের রসে ভাঁটা পড়ায় সমস্যায় শিউলিরা
- শীত না পড়ায় খেজুর রসে টান, তৈরি হচ্ছে না গুড়
- কনকচূড়ের খই দিয়েই তৈরি হবে 'জয়নগরের মোয়া', ধানকাটার কাজ শেষ পর্যায়ে