সুন্দরবন, 13 মে: সুন্দরবনের বাঘ বিধবারা এমনিতে অসহায়। তাঁদের স্বামীরা নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে বা জঙ্গলে মধু ভাঙতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা গিয়েছেন। এরপর থেকে কোনও মতে সংসার চালান তাঁরা। এরই মধ্যে লকডাউনে আরও অসহায় অবস্থায় পড়েছেন মানুষগুলো। যে যেটুকু আয় উপায় করে সংসার চালাচ্ছিলেন বর্তমানে তাও বন্ধ হয়েছে। এমত অবস্থায় তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তুষার মণ্ডল। প্রতিদিন দু'বেলা রান্না করা খাবার খাওয়াচ্ছেন তিনি বিধবাদের।
দুস্থ বাঘ বিধবাদের দু'বেলার খাবার জোটাচ্ছেন স্থানীয় শিক্ষক
সুন্দরবনের বাঘ বিধবার এমনিতেই অসহায়। এর মধ্যে লকডাউনে তাঁরা আরও সংকটের মধ্যে পড়েছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তুষার মণ্ডল। দু'বেলা রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করলেন তিনি অসহায় বিধবাদের জন্য।
সুন্দরবনের এই বাঘ বিধবাদের কেউ কেউ বিধবাভাতা পেলেও তাতে সংসার চলে না। ফলে তাঁরা নানাভাবে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করতেন। এমনকী, গ্রামের মানুষের কাছে হাত পাততেও বাধ্য হতেন। কিন্তু, বর্তমানে লকডাউনে অন্যদেরও একই অবস্থা। সব মিলিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের পারঘুমটি গ্রামের এই বিধবারা। এই গ্রামেই শতাধিক বিধবা মহিলা রয়েছেন। যাঁদের অধিকাংশের স্বামীর বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের কাছে এলাকাটি বিধবাপাড়া বলেই পরিচিত। সেই অসহায় বিধবাদের পাশে দাঁড়াতেই পারঘুমটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ রান্নাঘর। নিয়ম করে প্রতিদিন দু'বেলা টেবিল চেয়ারে বসিয়ে তাঁদের ডাল, ভাত, ডিম, মাংস খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এভাবেই দুস্থদের পাশে দাড়িয়েছেন পারঘুমটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তুষার মণ্ডল।
শিক্ষক তুষার মণ্ডল বলেন, "এই বিধবা মহিলাদের কথা কেউ ভাবছেন না। আমার মনে হল আজকের সংকটকালে তাঁদের দুটো পেট ভরে খাওয়াতে পারলে আর কিছু না হোক মনের তৃপ্তি হবে। কোথায় যাবেন ওঁরা? অনেকই বৃদ্ধ হয়েছেন। ঠিক মতো চলতে পারেন না। অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি খুশি। যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করব।"