সোনারপুর, 16 জুলাই :চড়া দামে ভেজাল কেরোসিন বিক্রির অভিযোগে সরকারি রেশন ডিলারের নাতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর পরিমাণে ভেজাল কেরোসিন এবং রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়েছে ৷ ধৃতের নাম পল্লব নস্কর ৷ বয়স 28 বছর ৷ শুক্রবারের ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনার সোনারপুর থানা এলাকায় ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পল্লব নস্কর সোনারপুরের বাসিন্দা হলেও তাঁর দাদুর বাড়ি বিষ্ণুপুরের রঘুদেবপুর এলাকায় ৷ তিনি ওই এলাকারই রেশন ডিলার ৷ অভিযোগ, রেশন ডিলার হিসাবে যে কেরোসিন (নীল রংয়ের) পেতেন পল্লবের দাদু, তাই তিনি অবৈধভাবে নাতিকে সরবরাহ করতেন ৷ আর সেই কেরোসিন সোনারপুরের বাড়িতে নিয়ে এসে তার ভোল পাল্টে দিতেন পল্লব ৷
আরও পড়ুন :ক্যানিংয়ে ভেজাল সর্ষের তেলের কারখানার হদিশ
সোনারপুরের বাড়িতে কার্যত একটা কারখানাই খুলে ফেলেছিলেন পল্লব ৷ লোকচক্ষুর আড়ালে সেখানেই চলত নীল কেরোসিনকে সাদা করার কেরামতি ৷ প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, নীল কেরোসিনের মধ্যে নানা ধরনের রাসায়নিক ও পাওডার মিশিয়ে তার রং বদলে ফেলতেন পল্লব ৷ তারপর তা জ্য়ারিকেনে ভরে বিক্রি করতেন নিজেই ৷ আশপাশের হোটেল, ছোটখাটো খাবারের দোকানই ছিল পল্লবের টার্গেট ৷ এইসব জায়গায় ভেজাল কেরোসিন বিক্রি করে ভালোই মুনাফা কামাতেন তিনি ৷
গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে শুক্রবার পল্লবের সোনারপুরের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ ৷ উদ্ধার হয় 1200 লিটার ভেজাল কেরোসিন এবং সাত কেজি রাসায়নিক ৷ এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে একটি পিকআপ ভ্যান এবং নগদ আট হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয় ৷ প্রসঙ্গত, রেশনের মাধ্যমে উপভোক্তাদের জন্য নীল রংয়ের যে কেরোসিন সরবরাহ এবং বণ্টন করা হয়, তা খোলা বাজারে বিক্রি করা বেআইনি ৷ তাছাড়া, নির্দিষ্ট রেশন ডিলারের কাছে যত সংখ্যক কার্ড থাকে, তার উপর ভিত্তি করেই নির্দিষ্ট পরিমাণ কেরোসিন পান তিনি ৷ সেক্ষেত্রে কালোবাজারি ছাড়া এই তেল খোলা বাজারে আসা সম্ভব নয় ৷
আরও পড়ুন :হরিশ্চন্দ্রপুরে সরষের তেলে পাম তেল মেশানোর অভিযোগ, গুদামে তল্লাশি প্রশাসনের
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, নাতির কুকর্মে রেশন ডিলার দাদুর প্রত্যক্ষ মদত ও সহযোগিতা থাকতে পারে ৷ যদিও স্থানীয়দের একাংশের প্রশ্ন, পুলিশের এই অনুমানই ঠিক ? নাকি নাতিকে শিখণ্ডী করে আসলে দাদুই চালাচ্ছিলেন ভেজাল কেরোসিনের কারবার ? প্রকৃত তথ্য জানতে তদন্ত শুরু করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ ৷ এদিনই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পল্লব নস্করকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে তারা ৷ বিচারক ধৃতকে 14 দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ৷