সুন্দরবন, 16 এপ্রিল : ‘জলে কুমির ডাঙায় বাঘ’ ৷ সাক্ষাৎ যমের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকো নিত্যদিনের কাহিনি সুন্দরবনের বাসিন্দাদের ৷ মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘ ও কুমিরের শিকার হতে হয় মৎস্যজীবী এবং মউলদের (মধু সংগ্রহ করেন যাঁরা) । করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে গত দু’বছর সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ বন্ধ ছিল ৷ এবার বন দফতরের অনুমতি নিয়ে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন মউলরা ৷ শুক্রবার থেকেই মধু সংগ্রহ করতে জঙ্গলে ঢুকেছেন মউলেরা (Peoples of Sundarbans Going to Deep Forest for Finding Honey After 2 Years) ৷ প্রাথমিক ভাবে 15 দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে ৷
এই সময়ে সংগৃহীত মধু বন দফতরের কাছে জমা দিতে হবে মউলদের ৷ তার পর দ্বিতীয়বারের জন্য মধু সংগ্রহ করতে যেতে পারবেন মউলরা ৷ বন দফতর সূত্রের খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি ও বসিরহাট রেঞ্জ থেকে 43টি দলকে এ বার মধু সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ প্রতিটি দলে 5-11 জন করে মউল রয়েছেন ৷ সব মিলিয়ে 340 জন মধু সংগ্রহ করবেন ৷ বসিরহাট রেঞ্জ থেকে 145 জন ও সজনেখালি রেঞ্জ থেকে 195 জন মউল ইতিমধ্যেই মধু সংগ্রহ করতে রওনা দিয়েছেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ৷
চৈত্র-বৈশাখ মাসই সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের মরসুম ৷ এই সময়ে সুন্দরবনের খলসে গাছে ফুল আসে ৷ এই খলসে ফুলের মধুই সব থেকে সুস্বাদু বলে দাবি মউলেদের ৷ সুন্দরবনের নদী-খাঁড়ির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময়ে মৌমাছির গতিবিধি লক্ষ্য করেন মউলরা ৷ নদীর পাড়ে নৌকা বেঁধে মৌমাছির পিছু নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে মৌচাকের খোঁজ ৷ মৌচাকের সন্ধান পেলেই কাঁচা হেতাল গাছের পাতা সংগ্রহ করে, তা দিয়ে মশাল বানিয়ে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে কাটা হয় চাক ৷ রীতি অনুযায়ী, প্রথম সংগৃহীত মধু জঙ্গলের পূর্বদিকের একটি গাছের গোড়ায় বনবিবিকে নিবেদন করেন মউলরা ৷