গঙ্গাসাগর মেলার প্রথম প্রস্তুতি বৈঠকে যাত্রী সুরক্ষা এবং পরিবহণে জোর কাকদ্বীপ, 1 সেপ্টেম্বর: পাঁচ মাস আগে থেকেই 2024-এর গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি শুরু করে দিল দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসন ৷ বৃহস্পতিবার কাকদ্বীপের মহকুমা শাসকের অফিসে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে হল প্রথম দফার বৈঠক। এই বৈঠকে প্রথমেই উঠে এল যাত্রী নিরাপত্তা এবং পরিবহণের বিষয়টি ৷ উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ 24 পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত ৷ ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ৷
2024-এর গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে এ দিনের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক ৷ বৈঠকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও যাতায়াত ব্যবস্থার উপর বেশি জোর দেওয়ার কথা বলেছেন জেলাশাসক ৷ এ দিনের এই বৈঠকে মূলত কাকদ্বীপ রেল স্টেশন, নামখানা স্টেশন, লর্ড নম্বর 8 ভেসেল ঘাট ও নারায়ণপুর থেকে গঙ্গাসাগরে বেনুবন পর্যন্ত যাতে পুণ্যার্থীদের জন্য 24 ঘণ্টা ভেসেল পরিষেবা থাকে সেদিকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে ৷
2024 সালের 12 জানুয়ারি শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তীর্থযাত্রীরা ওই সময় পূণ্যস্নানের জন্য সমবেত হন সাগরে ৷ নতুন বছরের 15 জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির দিন সাগরতটে পূণ্যস্নান করবেন তীর্থযাত্রীরা ৷ কিন্তু, সেই মেলার জন্য এখনও অনেকটা সময় হাতে থাকলেও, এখন থেকেই প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিতে চাইছে প্রশাসন ৷ প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, রাজ্যে উৎসবের মরশুম শুরু হচ্ছে অক্টোবর মাসের শেষ মাঝামাঝি সময়ে ৷ শারদোৎসব শেষ হতে হতে অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ হয়ে যাবে ৷
আরও পড়ুন:গঙ্গাসাগর সাফাই অভিযান ঝাঁটা হাতে মন্ত্রীরা
তারপরেই দীপাবলি ও কালীপুজো ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলা উৎসব শেষ হতে হতে এ বছর নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ হয়ে যাবে ৷ ফলে ব্যস্ত থাকবে রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকরা ৷ সেই কারণে গঙ্গাসাগর মেলার মতো বড় আয়োজনের জন্য বিশেষ সময় পাওয়া যাবে না ৷ তাই অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই মেলা আয়োজনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ 2024-এর গঙ্গাসাগর মেলাতে রেকর্ড সংখ্যক পুণ্যার্থীদের ভিড় হতে পারে ৷
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গঙ্গাসাগর মেলার সময় পুর্ণ্যার্থীরা এসে সাগরের বেলাভূমিতে ভিড় করেন ৷ কয়েক দিনের জন্যই গঙ্গাসাগর সমুদ্র সৈকত হয়ে ওঠে ছোট্ট একটা ভারতবর্ষ ৷ গঙ্গাসাগর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হওয়ার কারণে পুর্ণ্যার্থীদের অন্যতম যাতায়াতের মাধ্যমে হল ভেসেল বা লঞ্চ পরিষেবা ৷ বেশ কয়েক মাস ধরে মুড়িগঙ্গা নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে ৷ এর ফলে বেশ কিছু সময় ধরে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখতে হচ্ছে পরিবহণ দফতরকে ৷ গঙ্গাসাগর মেলার সময় এইরকম বাধার সম্মুখীন যাতে হতে না হয়, সেই জন্যই আগামী 29 অক্টোবর থেকেই মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ৷
আরও পড়ুন:হ্যাম রেডিয়োর মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে গঙ্গাসাগর মেলা
এ বিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, ‘‘2024-এর গঙ্গাসাগর মেলাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে প্রথম দফার বৈঠক হল আজ ৷ গঙ্গাসাগর মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে প্রশাসনকে যে সকল বাধার সম্মুখীন হতে হয় ৷ সেগুলি নিয়ে আজকে আলোচনা করা হল ৷ গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি মন্দিরের সামনে নদী বাঁধে ভাঙন রোধ করার জন্য রাজ্যের সেচ দফতর ব্যবস্থা নিচ্ছে ৷ কীভাবে কপিলমুনি মন্দিরকে রক্ষা করা যায়, গঙ্গাসাগর মেলার সময় পুর্ণ্যার্থীদের যাতায়াতের অসুবিধা যাতে না হয়, সেজন্য দু’টি স্থায়ী জেটিঘাটের নির্মাণ করা হবে ৷’’
এই বৈঠকের পর দক্ষিণ 24 পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘2024-এর গঙ্গাসাগর মেলার কথা মাথায় রেখে আজ রাজ্যের সব দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হল ৷ মূলত এই বৈঠকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও যাত্রী পারাপারের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে ৷ সুষ্ঠুভাবে মেলা পরিচালনার করার ক্ষেত্রে আগামী দিনেও বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা বৈঠক করবে ৷’’