সুভাষগ্রাম(দক্ষিণ 24 পরগনা), 23 জানুয়ারি:ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস যতবারই লেখা হবে ততবারই স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করা থাকবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম (Nejati Subhas Chandra Bose) । ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম কান্ডারী তিনি। আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করে ভারতবর্ষকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করার আন্দোলন শুরু হয়েছিল ৷ সেই আন্দোলনের অন্যতম নায়ক ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু । সোমবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর 127তম জন্মজয়ন্তী ৷ সারাদেশ জুড়ে সাড়ম্বরে পালন করা হচ্ছে এই দিনটিকে। মহান বিপ্লবী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীকে ভারতবর্ষে পরাক্রম দিবস হিসেবেও উদযাপন করা হয় । সোমবার দক্ষিণ 24 পরগনার সোনারপুরের সুভাষগ্রামে নেতাজির পৈতৃক বাড়িতে সাড়ম্বরে পালন করা হল এই দিনটিকে ।
নেতাজির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয়েছে গোটা বাড়িটিকে। সকাল থেকে নেতাজি পৈতৃক বাসভবনের সামনে উপচে পড়েছে ভিড় । সুভাষগ্রামের কোদালিয়ার এই বাসভবনকে দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত সংগ্রহশালাও দেখতে পাবেন সাধারণ মানুষ । 2013 সালের 22 জানুয়ারি দক্ষিণ 24 পরগনার একটি সরকারি সভা থেকে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজির পৈতৃক বাসভবন দেখতে আসেন । তখনই ওই বাড়ির ভগ্নদশা দেখে তিনি বিস্মিত হন। সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি ওই বাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণা করেন । তারপর থেকেই হেরিটেজ কমিশন ও রাজ্যের পূর্ত দফতর মিলে ওই বাসভবনের সংস্কার শুরু করে ।
2015 সাল থেকে 2019 পর্যন্ত চলে এই সংস্কারের কাজ । 90 শতাংশ কাজ শেষ হলেও 2020 সালে কোভিডের জন্য বাকি কাজ শেষ করা যায়নি । বসু পরিবারের সম্মতি নিয়েই জানকীনাথ বসু বাড়িটিকে যেভাবে তৈরি করেছিলেন ঠিক সেই আদল বজায় রেখেই সংস্কারের কাজ করা হয়েছে । সেই কড়ি-বড়গা, কাঠের জানলা, টালির চাল, ইট বিছানো পথ সব কিছুই নিপুণভাবে তৈরি করা হয়েছে । বাড়ির একটি বা দু'টি ঘরে পর্যটকদের জন্য অতিথি নিবাস করার পরিকল্পনা করেছিল সরকার । বাড়ির রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িত আছে ভারতবর্ষের স্বদেশি আন্দোলনের ইতিহাস । যার ব্যবহৃত বহু জিনিসপত্র এই বাড়িতেই দেখা যায় । সবমিলিয়ে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস পরতে-পরতে জড়িয়ে কোদালিয়ার বাড়িতে।
প্রায় 200 বছর আগে, নেতাজির পিতামহ হরনাথ বসু কটক থেকে কোদালিয়ার চিংড়িপোতায় বসতি স্থাপন করতে এসেছিলেন । ওই এলাকায় বাড়ি বানানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁর । জমি কিনেও বাড়ি তৈরি করতে পারেননি । নেতাজির বাবা জানকীনাথ বসু তাঁর বাবার শেষ ইচ্ছেপূরণ করতে চেয়েছিলেন এবং সেখানে একটি বিশাল বাড়ি তৈরি করেছিলেন । দু'তলা-সহ আটটি কক্ষ নিয়ে গঠিত বাড়িটি ।