পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

বঙ্গে শীতের শুরু, ফণি-বুলবুল-আমফান-যশের ক্ষত কাটিয়ে ছন্দে ফিরছে মৌসুনি দ্বীপ

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 10, 2023, 6:39 PM IST

Mousuni Island Tourism: প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফি বছরই প্রবল ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকা ৷ এখানেই ছোট্ট বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মৌসুনি ৷ ঝড়-ঝাপটায় প্রায় বন্ধ হয়ে যেতে বসেছিল পর্যটন শিল্প ৷ শীতের মরশুমে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রিসর্ট, কটেজগুলি ৷ পর্যটকদের ভিড় জমতে শুরু করেছে ৷

ETV Bharat
শীতের মরশুমে জনপ্রিয় পর্যটনস্থল মৌসুনি দ্বীপ

আমফান-যশের ক্ষত কাটিয়ে ছন্দে ফিরছে মৌসুনি দ্বীপ

মৌসুনি দ্বীপ, 10 ডিসেম্বর: প্রত্যেক বছর একের পর এক বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তছনছ হয়ে গিয়েছিল মৌসুনি দ্বীপের একাংশ ৷ ফণি, বুলবুল, আমফান, যশের মতো দুর্যোগে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মৌসুনি ৷ এই ছোট্ট দ্বীপটির বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি, চাষের জমি সবকিছু নষ্ট হয়ে যায় ৷ পাশাপাশি এই দ্বীপে গড়ে ওঠা রিসর্ট, কটেজও ভেঙে যায় ৷ স্বাভাবিকভাবে পর্যটন ব্যবসায়ীদের প্রভূত ক্ষতি হয় ৷ এখনও প্রতি পূর্ণিমা ও অমাবস্যার কোটালে প্লাবিত হয়ে যায় উপকূলের এলাকাগুলি ৷ তাই বারবার ধাক্কা খাচ্ছে পর্যটন ব্যবসা ৷ এদিকে শীত এসেছে বাংলায় ৷ এই সময় মৌসুনি দ্বীপে সুদিন ফিরবে বলে মনে করছেন এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা ৷

শীতের মরশুম মানেই মৌসুনি দ্বীপে পর্যটকদের আনাগোনা ৷ তাই নতুন করে সাজছে মৌসুনি ৷ রঙের পোঁচ পড়ছে কটেজগুলিতে ৷ সংস্কারের কাজও চলছে ৷ পর্যটকেরাও আসতে শুরু করেছেন ৷ এই অবস্থায় আশার আলো দেখছেন কটেজ মালিকরা ৷ চিনাই, মুড়িগঙ্গা, বটতলা নদী এবং চারদিক সমুদ্রে ঘেরা ছোট দ্বীপ মৌসুনি ৷ 2017 সালে হাতেগোনা কয়েকটি কটেজ দিয়ে শুরু হয়েছিল পর্যটন ব্যবসা ৷ প্রথম দিকে তেমন পর্যটকের দেখা তেমন না মিললেও ধীরে ধীরে জায়গাটি পরিচিতি পেতে থাকে ৷ নির্জন এই পরিবেশে সমুদ্রের ঢেউ, পাখির কলতান শুনে ছুটি কাটাতে আসেন অনেকেই ৷

এদিকে ফি বছর সুন্দরবনের উপর দিয়ে বয়ে যা একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ৷ ঘূর্ণিঝড়, বন্যার তাণ্ডবে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল গোটা দ্বীপ ৷ আর্থিক মন্দার কারণে বহু কটেজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু শীত পড়তেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে এই দ্বীপ ৷

ডিসেম্বর পড়তেই পর্যটকরা আসছেন মৌসুনি দ্বীপে ৷ এ বিষয়ে মৌসুনি দ্বীপের এক কটেজ মালিক তারক কুমার সরদার বলেন, "সমুদ্রের একেবারে কাছাকাছি থাকার কারণে কটেজগুলি বিভিন্ন সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ কয়েক মাস আগেই প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল একাধিক কটেজ ৷" স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ না-থাকার কারণে বারবার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই কটেজগুলি ৷ এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "7-8 কিলোমিটার বাঁধ ইতিমধ্যে পাকা করার কাজ হয়ে গিয়েছে ৷ আর 800 মিটারের কাজ হয়ে গেলেই মৌসুনি একেবারে নিরাপদ হয়ে যাবে ৷"

ফের ঘুরে দাঁড়াবে মৌসুনি দ্বীপের অর্থনীতি, আশাবাদী পর্যটক ব্যবসায়ীরা ৷ কলকাতার এক পর্যটক দেবারতি সরকার বলেন, "আমি একাধিকবার এই মৌসুনি দ্বীপে এসেছি ৷ এই জায়গাটা আমার খুব ভালো লাগে ৷ সামনেই সমুদ্র আর নির্জন পরিবেশ মানসিক শান্তি দেয় ৷ এখন তো কলকাতা থেকে খুব কম সময়ে এই মৌসুনি পর্যটন কেন্দ্রে চলে আসা যায় ৷" মৌসুনি দ্বীপে পৌঁছনোর জন্য নদীপথে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে নামখানা ব্লক প্রশাসন ৷ আগের থেকে বেশি বেশি ফেরি সার্ভিস চালানো হচ্ছে ৷ এর ফলে খুব সহজেই মাত্র 3 ঘণ্টা সময়ে কলকাতা থেকে মৌসুনি দ্বীপে চলে আসা যায় ৷ শীতের মৌসুনি দ্বীপের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পর্যটকদের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দ্বীপের বহু বাসিন্দা ৷ লক্ষ্মীলাভের দিন গুনছে মৌসুনি পর্যটন কেন্দ্রের কটেজ মালিকরা ৷

আরও পড়ুন:

  1. প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দ্রুত উদ্ধারকার্যে মৌসুনি দ্বীপে অস্থায়ী রেডিও স্টেশন হ্যামের
  2. ঘোড়ামারা দ্বীপের 30টি পরিবারকে পুনর্বাসন দিল রাজ্য সরকার
  3. মৌসুনি দ্বীপে কংক্রিটের বাঁধ তৈরির দাবিতে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে

ABOUT THE AUTHOR

...view details