চোখের জলে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ মৃত তৃণমূলকর্মীর মায়ের বাসন্তী, 10 জুলাই: পুত্রশোক বুকে নিয়ে চোখের জলে গণতান্ত্রিত অধিকার প্রয়োগ করলেন মৃত তৃণমূল কর্মী আনিসুর ওস্তাগারের মা আমেনা ওস্তাগার । কাঁদতে কাঁদতে জানালেন, এমন নিরাপত্তা থাকলে হারাতে হত না সন্তানকে ।
শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার ছবি ধরা পড়েছে । রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার পুনরায় ভোট হচ্ছে ফুলমালঞ্চপুরের 103 ও 113 নম্বর বুথে। সেখানে নিরাপত্তার জন্য ক্যানিং মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাসের নেতৃত্বে পঞ্জাব পুলিশ, রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তায় ।
এদিন সকালে মৃত আনিসুর ওস্তাগারের পরিবার ভোট দিতে আসে। ভোট দেওয়ার পর মৃতের মা আমেনা ওস্তাগার বলেন, "সেদিন যদি এমন নিরাপত্তা থাকত, তাহলে হয়তো আমার ছেলেকে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়তে পারত না। দুষ্কৃতীদের চরম শাস্তি চাই।" কান্না ভেজা গলায় তিনি আরও বলেন, "আমার ভোট দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। আমার বৌমা করিমা ওস্তাগার আমার ভোট দিয়েছে।" অন্যদিকে মৃতের বৌদি তথা 103 নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী রোকেয়া ওস্তাগারও চোখে জল নিয়ে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন সোমবার।
মৃত আনিসুরের বাবা রুহুল কুদ্দুস ওস্তাগার বলেছেন, "আগের দিন সুস্থ ভাবেই ভোট হচ্ছিল। তাই আমি ভোট দিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। ছেলে এলাকার লোকেদের ভোট দিতে নিয়ে এসেছিল। তার পর বোমাবাজি হয়েছিল। এখানে বিরোধীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। ওরা প্রথমে নির্দল দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু পরে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে আইএসএফ-কে সমর্থন করছিল। ওরাই ঘটিয়েছে অশান্তি।"
সোমবার পুনর্নির্বাচন নিয়ে ক্যানিংয়ের এসডিপিও দিবাকর দাস বলেন, "আমরা প্রচুর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছি। স্বাভাবিক ভাবেই ভোট হচ্ছে। আমরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি । আমাদের উপর মানুষ বিশ্বাস রেখেছে । মানুষ এসে নির্বিঘ্নে ভোট দিচ্ছেন । মৃত আনিসুর ওস্তাগারের পরিবারের লোকেরাও আজ ভোট দিয়েছে ।"
আরও পড়ুন: কেন এত কম আসনে পুনর্নির্বাচন ? বীরভূমে জেলাশাসকের দফতরে বিক্ষোভ বিজেপির
প্রসঙ্গত, 8 জুলাই পঞ্চায়েত ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন আনিসুর ওস্তাগার। দক্ষিণ 24 পরগনার বাসন্তী ব্লকের ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের, ফুলমালঞ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল তাঁর ভোটকেন্দ্র। সেই বিদ্যালয়ের 103 ও 113 নম্বর বুথের সামনে শনিবার মুড়ি-মুড়কির মতো বোমাবাজি করেছিল দুষ্কৃতীরা। ভয়ে সেখান থেকে পালাচ্ছিলেন ভোটাররা। বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী আনিসুর ওস্তাগিরের। ওই দুই বুথেই সোমবার হচ্ছে পুনর্নির্বাচন। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে সুষ্ঠভাবেই চলছে ভোটগ্রহণ।