গঙ্গাসাগর, 16 জানুয়ারি: হারিয়ে যাওয়া মানুষকে আবারও স্বজন ও পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে অঘোষিতভাবে সমস্ত দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয় 'হ্যাম রেডিয়ো' ৷ বিগত 24 বছর ধরে নিঃস্বার্থভাবে এই পরিষেবা দিয়ে আসছে (Missing persons return home with help of ham radio) ৷ সাধারণত যেকোনও রকমের বড় জমায়েতে হ্যাম রেডিয়ো কাজ করে থাকে ৷
প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলায় পূণ্য অর্জনে এসে ভিড়ের মধ্যে স্বজনদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান অনেকে পুণ্যার্থী (Gangasagar Mela in South 24 Parganas)। পুলিশ-প্রশাসন, মেলা কমিটির অনুসন্ধান কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন । কেউ ফিরে পান ঘর, আবার কেউ আবার দিগ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ান ৷ কিন্তু ওঁরা খোঁজেন । বাতাসে ইথার তরঙ্গে ভর করে ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের 39 জন সদস্য মেলা শুরুর দিন থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া মানুষকে ঘরে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। নেহাতই স্বেচ্ছাশ্রম আর শখের রেডিয়ো ব্যবহারের নেশা থেকে । এদের সকলেরই পরণে নীল রঙের টি-শার্ট, তাতে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা ‘হ্যাম’। সবার হাতে একটা করে ভিএইচএফ (ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি) ওয়াকিটকি। কচুবেড়িয়া, লট ৮, নামখানা, চেমাগুড়িতে হোগলা পাতার ঘরে হ্যাম রেডিয়োর কন্ট্রোল রুম । মূল কন্ট্রোল রুমটি গঙ্গাসাগরে প্রশাসনিক কার্যালয়ের পাশে ।
গঙ্গাসাগর এলাকার অধিকাংশ অঞ্চলেই মোবাইল পরিষেবা অত্যন্ত দূর্বল ৷ ফলে অনেক সময়ই সমস্যার সৃষ্টি হয় ৷ তাই বহু ক্ষেত্রে প্রশাসনিক যোগাযোগেও সাহায্য করছে হ্যাম। গঙ্গাসাগরে এই নিয়ে 24 বছর হয়ে গেল ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের (Ham Radio)। পুলিশ বা জেলা প্রশাসনের ওয়্যারলেস ব্যবস্থা অনেক সময়েই গঙ্গাসাগর মেলায় কাজ করতে পারে না । দেখা যায় যানজট, কোথায় বেশি ভিড়, কেউ আহত হলে, জলের ট্যাঙ্ক ফাঁকা হল বা কল নষ্ট হয়ে গেলে সেই তথ্য প্রাশাসনের কাছে পৌঁছয় না ৷ এ সব তথ্যই প্রশাসন আর মেলা কমিটির কাছে দ্রুত পৌঁছচ্ছে হ্যাম রেডিয়ো মারফৎ ।