সুন্দরবন, 25 মার্চ: গতবছর তেমন মধু পাওয়া যায়নি । মধু না হওয়ার কারণে জঙ্গল থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল মউলেদের দলকে । এ বছর আবার শুরু হচ্ছে সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ (Honey collection from Sundarban)। চলতি বছরের 8 এপ্রিল থেকে সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রকল্পের এলাকায় মধু সংগ্রহ করার জন্য মউলেদের কাছ থেকে আবেদন পত্র সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেছে বনদফতর । প্রাথমিক ভাবে বনদফতর মউলেদের 60টি দলকে জঙ্গলে ঢোকার অনুমতি দেবে । তবে এ বার নতুন মউলেদের দলকে মধু সংগ্রহের জন্য অনুমতি দেয়নি বনদফতর (Sundarban news)।
এক আধিকারিক জানান, সুন্দরবনের জঙ্গল-লাগোয়া, নদী-খাঁড়িতে লাগাতার বাঘের হানায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে । এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র অভিজ্ঞ মউলেদেরই (Maule to go into Sundarban forest to collect honey ) জঙ্গলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে (South 24 parganas news)। মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে জঙ্গলে গিয়ে মউলেদের প্রাণহানি হলে মাথা পিছু এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে বনদফতর । এ বছর সরকার নির্ধারিত মধুর দাম কেজি প্রতি 180 টাকা । আর মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে 11 টন । সুন্দরবনের মধুর সুখ্যাতি জগৎজোড়া ।
আরও পড়ুন:ফুলের মরশুমে কাশ্মীরে পুরোদমে শুরু মধু সংগ্রহ
প্রতিটি মধু সংগ্রহকারী দলে থাকে 6 জন করে মউলে (Maule of Sundarban)। এই মধু সংগ্রহকারী বছরের অন্যান্য সময় সুন্দরবনের খাল-বিলে মাছ কাঁকড়া ধরে জীবন-জীবিকা অতিবাহিত করেন । বছরের এই সময়টায় বনদফতরের থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে জীবনের বাজি রেখে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে তাঁরা বেরিয়ে পড়েন মধু সংগ্রহের কাজে । মউলেরা জঙ্গল থেকে যাতে নিরাপদে পরিবারের কাছে ফিরে আসে, সেই প্রার্থনা করে চলছে বনবিবির কাছে পূজার্চনা ।
মধু সংগ্রহে যাবেন সুন্দরবনের জঙ্গলে, আশায় বুক বাঁধছেন মউলেরা অভিজ্ঞ মউলেরা জঙ্গলে নেমে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েন । মৌচাক দেখতে পেলেই বিশেষ আওয়াজ করে সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করেন । তারপর আগুনের ধোঁয়া দিয়ে মধু সংগ্রহের কাজ চালান । প্রতিবছর এই মধু সংগ্রহের সময় সুন্দরবনে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বেড়ে যায় । বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য রুখতে পুলিশ প্রশাসন ও বনদফতরের উদ্যোগে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সুন্দরবনের জঙ্গলের বিভিন্ন দিকে ।
আরও পড়ুন:কোচবিহারে এন এন পার্কে চারাগাছ ও মধু বিক্রির উদ্যোগ বন দপ্তরের
প্রাথমিক ভাবে 15 দিনের জন্য মধু সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে । প্রথম 15 দিনে সংগৃহীত মধু বনদফতরের কাছে জমা দিয়ে ফের দ্বিতীয় দফায় জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহের জন্য রওনা দেবেন মউলেরা । বন দফতরের তরফে মউলেদের সংগৃহীত মধু সরকারি দাম কেজি প্রতি 180 টাকায় কিনে নেওয়া হবে । আর সংগৃহীত মোম মউলেরা খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন । দামের পাশাপাশি 1 কেজি মধু সংগ্রহের জন্য মউলেদের 20 টাকা করে দেওয়া হবে । মউলেদের সংগ্রহ করা ওই মধু বনদফতরের থেকে কিনে নেবে ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট কর্পোরেশন । সেই মধু সংশোধনের পরে প্যাকেজিং করে ‘মৌবন’ নামে বাজারে বিক্রি করবে তারা । ফরেস্ট কর্পোরেশনকে দেওয়ার পরেও মধু বাড়তি থাকলে তা বন দফতরের তরফেই বাইরে বিক্রি করা হবে ।