গঙ্গাসাগর, 8 জানুয়ারি: রাজনৈতিক মহলে এই মুহূর্তে শাসকদলের নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে জোড় আলোচনা। রবিবার ডায়মন্ডহারবারের মঞ্চ থেকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বুঝিয়েছিলেন নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়ছেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর সোমবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ! তবে এদিন নিজের কথা বলে নয়, তাঁর অস্ত্র 60 পেরনো আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীদের মতো আমলারা।
স্থান গঙ্গাসাগর হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী থেকে শুরু করে গৌতম সান্যালরা। বয়স 60 পেরোলেও তাঁরা সকলেই যে এখনও রাজ্য প্রশাসনের কাছে অপরিহার্য তা বোঝাতে গিয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "60 বছর বয়স হয়ে গেলেই যে কাউকে বিদায় দিতে হবে, তা রাজ্য সরকার বিশ্বাস করে না। বরং অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো হয়।"
প্রসঙ্গত, এদিন গঙ্গাসাগরে উপস্থিত সরকারি আমলাদের পরিচয় দেওয়ার সময় সঙ্গে থাকা হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়দের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বলেন, "আমার সঙ্গে আছেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী প্রাক্তন মুখ্যসচিব। তিনি এখন আমার চিফ এডভাইজার ফাইনান্স ৷ আছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও অ্য়াডভাইসর অফ সিএমও। যাঁরা যোগ্য লোক তাঁদের 60 বছরে বিদায় দিই না। আমরা তাঁদের অভিজ্ঞতাকে পুরো কাজে লাগাই। একটা বিরল ঘটনা ঘটেছে তিনজন প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে আমরা একসঙ্গে পেয়েছি।" আপাত দৃষ্টিতে এই বক্তব্যে কোনও বিতর্কের জায়গা নেই। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এখানেও একটি তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছেন। রাজনৈতিক মহল বলছে, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য শুধুই আমলাদের জন্য বলা নয়। এর পিছনে অন্য এক কোনও বার্তা রয়েছে। তা তিনি নিজের হাতে তৈরি দলকেই ঘুরপথে দিতে চাইলেন।
রবিবারই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ডহারবারের মঞ্চ থেকে বলেছিলেন, "বয়স হলে আমাদের কর্ম ক্ষমতা কমে। এতে অসুবিধা কী আছে ? আজকে আমি যা করতে পারছি তা তো আমি 70 বছরে করতে পারব না। আমারও কর্মক্ষমতা কমবে। যাঁরা সাংবাদিক আছেন তাঁদের বয়স 60 বছর হলে আজকের মতো ক্যামেরা নিয়ে ছুটোছুটি করতে পারবেন না। সব ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য ৷ খেলার ক্ষেত্রেও যেমন প্রযোজ্য, রাজনীতিতেও প্রযোজ্য হওয়া উচিত আমি মনে করি। এই কথাটাই এত বাজার গরম করার মত কী আছে ?"