জয়নগর, 18 নভেম্বর: রাজ্যে একের পর এক তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজ্য-রাজনীতি ৷ জয়নগরে বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দলুয়াখাকি গ্রামে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা ৷ 20 থেকে 25টি বাড়িতে চলে ভাঙচুর-লুটপাট ৷ এমনকী পেট্রল ঢেলে লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুনও ৷ রাজনীতির কালো ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে এলাকার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীর স্বপ্ন ৷ পুড়ে ছাঁই হয়ে যায় যাবতীয় বই-খাতা ৷ টেস্ট পরীক্ষার আগে জীবনের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ওই পড়ুয়া ৷
মন খারাপ করে পড়ুয়া বলেন, "সোমবার গ্রামের বেশ কিছু দুষ্কৃতী আমাদের বাড়িতে হামলা চালায় ৷ বাড়ি ভাঙচুর করে, আগুন লাগিয়ে দেয় ৷ আমরা বারণ করা সত্ত্বেও তারা শোনেনি ৷ আমার সব বই-খাতা পুড়ে গিয়েছে ৷ আমি সিপিএম পার্টি অফিসে গিয়েছিলাম ৷ সেখানে আপনার সমস্যার কথা জানাই ৷ সেখানকার সদস্যরা আমার বইয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে ৷ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে ৷ সেখান থেকেও বই দিয়ে গিয়েছে ৷"
দলুয়াখাকি গ্রামে তৃণমূল নেতা খুনের পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে থাকে ৷ দুষ্কৃতীরা লুটপাট চালানোর পর আগুন লাগিয়ে দিলে অসহায় মানুষেরা দক্ষিণ বারাসাতের সিপিএমের পার্টি অফিসে আশ্রয় গ্রহণ করে ৷ আগুন লাগানোর ঘটনায় অভিযোগের তির ওঠে তৃণমূলের দিকে ৷ দু'দিন পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে দলুয়াখাকি গ্রাম । ঘর ছাড়া মহিলারা ফিরে আসছেন গ্রামে। কিন্তু নিজের বাড়িতে ফিরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়ে চালতা বেড়িয়া হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ৷ আগুনে পুড়ে গিয়েছে সমস্ত বই-খাতা ৷ শনিবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা ৷ কীভাবে দেবে তা ভেবেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ৷
পড়ুয়ার মা বলেন, "দর্জির কাজ করে অনেক কষ্টে মেয়েটাকে পড়িয়েছি। বইপত্র কিনে দেওয়াটা আমাদের মতো মানুষের পক্ষে সহজ ছিল না। মেয়েটা যদি এবার মাধ্যমিকে বসতে না পারে, এত দিনের সব চেষ্টা, সব লড়াই বিফলে যাবে।" মানবিক কিছু মানুষের সাহায্যে বই হাতে পেয়েছে ওই ছাত্রী ৷ আশা, আগামিদিনে এই ধরনের ঝড়ের মুখে যেন পড়তে না হয়য় কোনও পড়ুয়াকে ৷