কাশীপুর, 27 মে : জামাইষষ্ঠীতে বাঙালির পাতে মাছ নেই ৷ একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে আমফানে পর্যুদস্ত দক্ষিণ 24 পরগনা ৷ সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারেননি মৎস্যজীবীরা ৷ ফলে বাজারে অমিল ইলিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ ৷ ক্রেতাদের ভরসা স্বাদু জলের মাছে ৷
বাঙালির তেরো পার্বণের অন্যতম জামাইষষ্ঠী ৷ এমন একটি বিশেষ দিনে জামাইয়ের পাতে মাছ উঠবে না তা কী করে হয়? যার যেমন সাধ্য তেমনভাবেই জামাই আপ্যায়ন করেন ৷ সকালে বাজারে গিয়ে দেখেশুনে জামাইয়ের জন্য সেরা মাছ নিয়ে আসেন শ্বশুরমশাই ৷ ইলিশ, চিংড়ি, পার্শ্বে, ভেটকি-র পসরা সাজিয়ে বসেন মাছ বিক্রেতারাও ৷ কিন্তু এবার সেই ছবি দেখা যাচ্ছে না কাশীপুর বাজারে ৷ একে কোরোনা ভাইরাসের জন্য দু’মাসের উপর লকডাউন চলছে ৷ তার সঙ্গে রয়েছে আমফানের প্রভাব ৷ দুইয়ের যাতাকলে পড়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারেননি মৎস্যজীবীরা ৷ ফলে ইলিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ বাজারে পৌঁছয়নি ৷ যেটুকু বিক্রি হচ্ছে, তার বেশিরভাগ স্বাদু জলের মাছ ৷ এতেও সমস্যা রয়েছে ৷ লকডাউনের প্রভাব পড়েছে মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে ৷ ফলে জামাইষষ্ঠীতে বাজারে অমিল মাছ ৷
নামখানা, কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ সহ একাধিক বড় বড় বাজারে অন্যান্য বছরে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ওঠে ৷ কিন্তু গত বছর ঝড়-বৃষ্টির কারণে ইলিশের জোগান কম ছিল ৷ ফলে হিমঘরে ইলিশ মজুত করা যায়নি ৷ গত সপ্তাহে আমফানের জেরে নদীতে মাছ ধরতে পারেননি মৎস্যজীবীরা ৷ জামাইষষ্ঠীর সকালে বাজারে এসে মাছ না পেয়ে নিরাশ ক্রেতারা ৷ গোপাল বিশ্বাস নামে এক ক্রেতা জানান, ‘‘আমার 71 বছরের জীবনে এই প্রথম দেখলাম, জামাইষষ্ঠীর দিন বাজারে ইলিশ নেই ৷ অন্য মাছের দাম বেশি ৷ ডাল-আলুসেদ্ধ দিয়েই জামাইষষ্ঠী পালন করতে হবে ৷’’ আরেক ক্রেতা সুবীর ঘোষ জানান, ‘‘বিগত বছরে এরকম পরিস্থিতি দেখিনি ৷ জামাইষষ্ঠীতে বাজারে মাছ নেই ৷ বাঙালির পাতে মাছ পড়বে না তা কল্পনা করতে পারি না ৷’’