কাকদ্বীপ, 10 জুলাই: ইলিশ ধরতে যে ট্রলারগুলি সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল, কার্যত খালি হাতেই ফিরে আসতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু অন্যবছর এই ছবিটাই থাকে উলটো ৷ রুপোলি শস্যে ভরে যায় বাজার ৷ এই বছর কেন এমনটা হচ্ছে, তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না মৎস্যজীবীদের একাংশ। তাঁদের আশা, আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণে বৃষ্টি বাড়লে হয়তো জালে ভালো ইলিশ ধরা পড়বে ।
প্রজনন ঋতুতে মায়ানমারের ভিটে ছেড়ে উজান বেয়ে বঙ্গের নদীতে চলে আসে ইলিশ । তবে ইলিশের আগমন নির্ভর করে নদী ও সমুদ্রের লবণের পরিমাণের উপর । সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের মতে, নদী ও সমুদ্রে লবণের পরিমাণ যত কমবে, ততই মোহনার দিকে এগিয়ে আসবে ইলিশ। তবে এর জন্য সমুদ্রে পূবালি বাতাস থাকাও জরুরি। এই বছর দক্ষিণবঙ্গে তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় সমুদ্রের নোনাভাব কাটেনি । ফলে সমুদ্রের উপকূল সংলগ্ন এলাকায় ইলিশের ঝাঁকের দেখা মিলছে না ।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের নদীতে ইলিশ তেমন ধরা না পড়লেও বাংলাদেশের নদ-নদীতে এত ইলিশ ঢুকছে কীভাবে ? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাংলাদেশের নদ-নদীতে নোনাভাব খানিক কেটে যাওয়ায় বহু ইলিশ ঢুকেছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও হুগলি নদীতে ইলিশের দেখা নেই। তার কারণ, ওই নদীতে পলি জমতে শুরু করায় ঢোকার সময় বাধা পাচ্ছে ইলিশের ঝাঁক। এ ছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত 'ফিশিং' একটা বড় কারণ বলেই মনে করছেন মৎস্যজীবীরা।
মরশুমেও ইলিশ ধরতে না পারায় বেজায় দুর্দিনে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা আরও পড়ুন :মরশুমের শুরুতেই জালে বিপুল ‘রুপোলি শস্য’
তাঁদের দাবি, প্রয়োজনের অধিক মাছ ধরায় অনেক সময় ওড়িশা উপকূলের দিকে চলে যায় ইলিশ । মৎস্য ব্যবসায়ী শত্রুঘ্ন গিরি বলেন, "ইলিশের মরশুমে এখন বাজার শূন্য। কবে ইলিশ আসবে তাও জানি না।" সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, ইলিশের আদর্শ পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি । বৃষ্টি পড়লে সমুদ্রে নোনাভাব কেটে যাবে। মিষ্টি জলে ইলিশ আসবে। হালকা বৃষ্টি ও পূবালি বাতাস ইলিশের আদর্শ পরিবেশ । আশা করা যাচ্ছে এবার ইলিশ পাওয়া যাবে ।