ভাঙড়, 18 এপ্রিল:মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় মোবাইল উদ্ধার অভিযানের রেশ কাটতে না কাটতেই দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড়ে নয়া নাটক ! পোড়া নথি সংগ্রহ করতে মাঠে নেমে হুটোপাটি শুরু করে দিলেন সিবিআই আধিকারিকরা ! সেই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন গ্রামবাসী ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ৷
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে ৷ ঘটনাস্থল, ভাঙড়ের আন্দুলবেড়িয়ার বাগানবাড়ি সংলগ্ন এলাকা ৷ গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, এলাকারই কয়েকজন তৃণমূল নেতা কাগজবোঝাই একটি লরি নিয়ে সেখানে পৌঁছন ! তারপর সেই লরি থেকে নামানো হয় কাগজের স্তূপ ৷ সেই স্তূপে আগুন ধরিয়ে দেন ওই তৃণমূল নেতারা ! কৌতুহল হওয়ায় গ্রামেরই কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে বিষয়টি দেখেন ৷ আর তাতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁদের ! কারণ, যেগুলিকে তাঁরা সাধারণ বাতিল কাগজ ভাবছিলেন, সেগুলি আসলে সরকারি নথি ! এমনকী, তাতে সরকারি সিলমোহরও রয়েছে ! তবে, এ নিয়ে ক্য়ামেরার সামনে মুখ খুলতে রাজি হননি স্থানীয় বাসিন্দারা ৷
সূত্রের দাবি, গ্রামবাসীর মধ্যেই কেউ এই ঘটনা সিবিআইকে জানান ৷ এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় সিবিআইয়ের 6-7 জনের একটি দল ৷ পুরো এলাকাটি ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ৷ তারপরই শুরু হয় নথি বাঁচাও অভিযান ! রীতিমতো ছুটোছুটি, হুটোপাটি করে পোড়া, আধপোড়া, আংশিক পোড়া নথি উদ্ধারের মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দেন সিবিআই আধিকারিকরা ! খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও ৷ শুরু হয় ঘটনার সরাসরি সম্প্রচার ৷ একটু দূরে ঘটনাস্থল ঘিরে বাড়তে থাকে কৌতূহলীদের ভিড় ৷
আরও পড়ুন:প্রায় 72 ঘণ্টা পর অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার জীবনকৃষ্ণের দ্বিতীয় মোবাইল
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই ঘটনার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির সম্পর্ক থাকতে পারে ! কেন বলা হচ্ছে একথা ? কারণ, যে তৃণমূল নেতাদের এদিন সকালে লরিবোঝাই কাগজ মাঠে আনতে এবং তাতে আগুন ধরাতে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে, তাঁরা নাকি একটা সময় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন ! অভিযোগ, দুর্নীতির প্রমাণ লোপাট করতেই এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে ! তবে একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, দিনের আলোয় সকলের চোখের সামনে কেন এমন কাণ্ড ঘটানো হল ? তাহলে কি এর নেপথ্যে আরও কোনও গভীর কারণ রয়েছে ? এর উত্তর খুঁজবে সিবিআই ৷ এদিন দেখা যায়, কাগজের স্তূপের আগুন নেভাতে তাতে জল ও বালি ঢালা হচ্ছে ৷ তাতে কিছু নথি উদ্ধার করা সম্ভব হলেও সবগুলিকে আগুনের গ্রাস থেকে বাঁচানো যায়নি ৷