সুন্দরবন, 7 এপ্রিল: সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষের জন্য কলকাতা থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এনে এলাকায় চলেছে দুয়ারে ডাক্তার শিবির।
কুলতলির জামতলায় বিআর আম্বেদকর কলেজে দুয়ারে ডাক্তার শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের 10 জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিবিরে আসেন। স্থানীয় ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, শিবির থেকে প্রায় 1600 মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন। এলাকা থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে ভুবনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার জন্য ভিড় করেন বহু রোগী। কিন্তু রোগীদের অভিযোগ, সপ্তাহে দু’দিন করে একজন চিকিৎসক আসেন। বাকি দিনগুলিতে এক জন ফার্মাসিস্ট থাকেন। তিনিই ওষুধ দেন। কোনও কোনও সপ্তাহে চিকিৎসকদেরও দেখা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। তবে কিছুটা সুরাহা হয়েছে দুয়ারে ডাক্তার পরিষেবা মেলায় ৷
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি হলেও ভালো চিকিৎসা পরিষেবা নেই। নেই আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে গুরুতর কোনও সমস্যা হলে তিরিশ কিলোমিটার দূরে গ্রামীণ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয় রোগীকে। রোগীর পরিবারকেই গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতে হয়। হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবে গ্রামীণ চিকিৎসকেরাই ভরসা বলে জানান এলাকার মানুষ। ভুবনেশ্বরী ছাড়াও কুলতলি ব্লকে কৈখালি এবং কাঁটামারিতে আরও দু'টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। অভিযোগ, সেখানেও নিয়মিত চিকিৎসক থাকেন না। কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রের খবর, একজন চিকিৎসকই তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু'দিন করে পরিষেবা দেন। স্থানীয় মানুষের দাবি, দুয়ারে ডাক্তার শিবির না করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত চিকিৎসক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
ভুবনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে আসা মনমোহিনী মাল এর পরিবারে লোক বলেন, "সপ্তাহে দু’দিন, মঙ্গল ও বুধবার করে একজন চিকিৎসক আসেন। কিন্তু শুক্রবার এসে দেখা গেল, তিনি আসেননি। অনেক সময়ে খরচ করে হাসপাতালে এসে চিকিৎসক না দেখিয়েই ফিরতে হয়। প্রত্যন্ত এই এলাকায় নিয়মিত একজন চিকিৎসক থাকলে খুব ভালো হয়।" বাসন্তী পাল নামে এক রোগী বলেন, "শুনেছি জামতলায় দুয়ারে ডাক্তার শিবির হচ্ছে। কিন্তু তাতে আমাদের কী লাভ! গাড়ি ভাড়া করে তিরিশ কিলোমিটার গিয়ে ডাক্তার দেখানো সম্ভব নয়। তার থেকে এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন চিকিৎসক থাকলে ভালো হত।"