জয়নগর, 24 ফেব্রুয়ারি: প্রাচীন ও বর্ধিষ্ণু শহর জয়নগর । তবে যানজট থেকে শুরু করে পানীয় জল ও নিকাশির যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে এই শহরাঞ্চলে । দেড়শো বছরের বেশি বয়স হয়েছে পৌরসভার । এই দীর্ঘ সময়কাল ধরে কংগ্রেসই মূলত পুরসভাকে নিজেদের দখলে রেখেছিল । মাঝে একবার তৃণমূল কংগ্রেস পৌরসভার দখল নিলেও গতবার ফের কংগ্রেস এই পৌরসভার দখল নেয় । গত কংগ্রেস বোর্ডের আমলে পার্ক থেকে শুরু করে পানীয় জলের রিজার্ভয়্যার, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাস্তা সংস্কার, নিকাশিনালা তৈরি-সহ বহু কাজ হলেও এখনও এই পৌরসভার মূল সমস্যা যানজট ও নিকাশি । যার ফলে এলাকার সাধারণ মানুষ যথেষ্ট কষ্টে রয়েছেন ।
14টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত জয়নগর মজিলপুর পৌরসভা (Jaynagar Mojilpur Municipality)। এ বার 14টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র 9টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস । তবে বাকি পাঁচটি ওয়ার্ডে কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী রয়েছে । অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস 14টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে । বিজেপি 13টি ওয়ার্ডে ও সিপিএম একটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে ।
গতবার 14টি ওয়ার্ডের মধ্যে 6টি ছিল কংগ্রেসের দখলে । তৃণমূল জিতেছিল 4টি ওয়ার্ডে । অন্যদিকে সিপিএম 1টা, এসইউসিআই 2টো ও নির্দল প্রার্থী 1টি ওয়ার্ডে জয়লাভ করে । নির্দল ও এসইউসিআইকে সঙ্গে নিয়ে বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস । তবে পৌরসভার শাসনকাল শেষ হতেই সরকার নির্ধারিত পৌরপ্রশাসক বসানো হয় এখানে । সেখানে অবশ্য তৃণমূলের লোকজনকেই পৌরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয় ।
জয়নগর মজিলপুর পৌরসভা কি এবার ধরে রাখতে পারবে কংগ্রেস ? আরও পড়ুন:Bengal Civic Polls 2022 : "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার মুসলিম সম্প্রদায়কে বুক পেতে ঠেকিয়েছেন", নির্বাচনী প্রচারে পার্থ
রাজ্যের সর্বত্র পৌরসভাগুলি তৃণমূলের দখলে গেলেও এই পৌরসভায় কংগ্রেস (Will Congress be able to retain Jaynagar Mojilpur Municipality) নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল । ফলে এই 152 বছরের পৌরসভাকে পুনরুদ্ধার করতে কোমর বেঁধে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল । ইতিমধ্যেই দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার 14 জন বিধায়ক এই পৌরসভার 14টি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের হয়ে প্রচার শুরু করেছেন । যে কোনও মূল্যে এই পৌরসভাকে নিজেদের দখলে নিতে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার তৃণমূলের পৌর নির্বাচনের পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লা, সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি যোগরঞ্জন হালদারের নেতৃত্বে জোরকদমে প্রচার চলছে । থেমে নেই জয়নগর বিধানসভার বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসও । তিনিও প্রতিদিন দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচার করছেন ।
তৃণমূল জোরকদমে প্রচার করলে এখনও সে ভাবে প্রচারে নামেনি কংগ্রেস, বিজেপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি । রাস্তার মোড়ে মোড়ে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছোট ছোট পথসভা ছাড়া সে ভাবে প্রচারে ঝড় তুলতে দেখা যায়নি তাঁদের । অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার, জনসভা করতে দেখা গিয়েছে । তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে পাঁচটি ওয়ার্ডে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থী ও সিপিএমকে সমর্থন করেছে কংগ্রেস । তাই সেই ওয়ার্ডগুলিতে প্রার্থী না দিয়ে বাকি 9টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে তাঁরা।
আরও পড়ুন:Bengal Civic Poll 2022 : পুরুলিয়ায় ভোট প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ সায়ন্তিকার
অনেক হিসেব নিকেশ চলছে । চলছে জোর জল্পনা । তবে শেষ হাসি কে হাসবে এই পৌরসভায় তা নির্ধারিত হবে আগামী 27 ফেব্রুয়ারি জনতার রায়ে ।