ডায়মন্ড হারবার, 16 মার্চ : মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা । বসন্ত উৎসবের প্রস্তুতি এখন চলছে জোরকদমে । দক্ষিণ 24 পরগনার মন্দিরবাজারের আচনা গ্রামে নাওয়া-খাওয়া ভুলে আবির তৈরিতে ব্যস্ত আবির কারখানার শ্রমিকরা (Labourers Making Abir for Dol Utsav)। গত দু'বছর হোলির আনন্দ ভুলিয়ে দিয়েছে করোনা । করোনার জেরে ব্যবসাতে আর্থিক ধাক্কা খেয়েছে আবির ব্যবসায়ীরা । অবশেষে করোনার পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দক্ষিণ 24 পরগনা আবির ব্যবসা ।
প্রতিবছর দোল ও হোলিতে আবিরের রংয়েই রঙিন হয়ে ওঠে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত । কিন্তু গত দু'বছরে বদলে গিয়েছে ছবি । কার্যত বেরঙিন হয়ে উঠেছে জেলার আবির ব্যবসায়ীদের জীবন । কারণ করোনাকালের সেভাবে হয়নি রং খেলা । তবে এবার করোনার দাপট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসায় ফের চাহিদা বেড়েছে আবিরের । কার্যত সেই আবিরের বিপুল চাহিদা মেটাতে দিনরাত এক করে কাজ করছেন আবির কারখানার শ্রমিকরা ।
এবছর রংয়ের তুলনায় আবিরের চাহিদা বেশি দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ 24 পরগনায় আরও পড়ুন :Women Holi In Raiganj : ছেলেরাই কেন করবে সব মজা, দোলের আগেই রংয়ের খেলায় মাতলেন রায়গঞ্জের গৃহবধূরা
জানা গিয়েছে, এবছর রং-এর তুলনায় আবিরের অনেকটাই চাহিদা বেড়েছে । তাই বিলম্ব করার সময় নেই। মন্দিরবাজারের আচনা গ্রামে তাই এখন চরম ব্যস্ততা । আবির প্রস্তুতকারী কৃষ্ণেন্দু পুরকাইত বলেন, "দু'বছর করোনার জেরে ব্যবসা খুবই খারাপ । তেমনভাবে কোনও অর্ডার আসেনি । কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই এ বছর আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে ব্যবসা । ইতিমধ্যেই কলকাতা ও দক্ষিণ 24 পরগনার বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে অর্ডার । তাই দিনরাত এক করে কাজ চলছে । রং-এর তুলনায় আবিরের চাহিদা অনেক বেশি । রাসায়নিক মেশানো রং-এ মানুষের ত্বকের অনেক সমস্যা হয় । কিন্তু আমাদের এই আবির ব্যবহার করলে ত্বকের কোনও সমস্যা হয় না । আমরা এখানে মোট সাতটি রংয়ের আবির তৈরি করি । তবে এটা মাত্র কয়েকটা মাসেরই ব্যবসা । বসন্ত উৎসব শেষ হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যাবে আবির তৈরির কাজ, আবার আমরা চাষবাসে ফিরে যাব ।"
আরও পড়ুন : Holi In Santiniketan 2022 : এবারও বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসবে বেড়ি, প্রশাসনকে দুষলেন উপাচার্য
এদিকে জমে উঠেছে দক্ষিণ 24 পরগনার জেলার রং-এর বাজার । দক্ষিণ 24 পরগনার বিভিন্ন বাজারগুলিতে রংয়ের পসার সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা । ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দু'বছর তেমন ব্যবসা হয়নি । বড়সড় ব্যবসায় লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে । এবছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই আবার পসরা সাজিয়ে বসেছে । মানুষের মধ্যে রং এর তুলনায় আবিরের চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে । কিন্তু আবিরের দাম প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে । গত দু'বছর আগে যে আবির 7-10 টাকা শয়ে বিক্রি হতো সেই আবির বিকোচ্ছে 12-15 টাকায় ।