কোচবিহার, 5 ফেব্রুয়ারি:কোচবিহারের তিস্তা নদীর ওপর নবনির্মিত জয়ী সেতুর উদ্বোধনের পরই বন্ধ করতে হল যান চলাচল৷ চলতি মাসের 7 ফ্রেব্রুয়ারি থেকে 17 ফেব্রয়ারি পর্যন্ত তিস্তার জয়ী সেতুর উপর যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে পূর্তদপ্তরের তরফে৷
কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ মহকুমায় মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি - দুটি প্রশাসনিক ব্লক এলাকাকে প্রাকৃতিকভাবে বিছিন্ন করে রেখেছে তিস্তা নদী৷ বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবিমতো নবনির্মিত জয়ী সেতুর দ্বারা মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়৷ ফেব্রুয়ারি মাসের 1 তারিখ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ি থেকে সেতুর উদ্বোধন করেন রিমোট সেন্সরের মাধ্যেমে৷ সেদিনই সেতু চত্বরে তিস্তার দুই পাড়ের হাজার মানুষ সমবেত হন৷ সেতু সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অর্ঘ রায় প্রধান একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন৷ সাধারণ মানুষের কাছে রাজ্য সরকারের অবদানের বিষয়ে বক্তব্য রাখেন৷ সেতুর উদ্বোধনের পরপরই শুরু হয় যানবাহন চলাচল৷ এরপরই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পূর্ত দপ্তর৷
উদ্বোধনের পরই কেন সাময়িকভাবে বন্ধ হচ্ছে যানবাহন চলাচল?
গত সোমবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে উদ্বোধন হয় তিস্তা নদীর ওপর রাজ্যের দীর্ঘতম জয়ী সেতুর। পূর্ত দপ্তরের নতুন বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের 7 তারিখ থেকে 17 তারিখ পর্যন্ত সেতুটির উপর দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন হলেও সেতুর ভারবহন ক্ষমতা বা ফিটনেস পরীক্ষা করা হয়নি৷
ওই বিষয়ে পূর্ত দপ্তরের তিস্তা ব্রিজ কনস্ট্রাকশন ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ কুমার সিংহ জানিয়েছেন, "নবনির্মিত সেতুতে যানচলাচলের অনুমতি দেওয়ার আগে সেতুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। সেতুর ভারবহন ক্ষমতা বা ফিটনেসে পরীক্ষা করা দরকার৷ পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা ফিটনেস সার্টিফিকেট দিলেই সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। আগামী 7 তারিখ থেকে সেই পরীক্ষার কাজ শুরু করা হবে।"
ফিটনেস পরীক্ষা না-করেই উদ্বোধন? যান চলাচল বন্ধ জয়ী সেতুতে
কোচবিহারের তিস্তা নদীর ওপর নবনির্মিত জয়ী সেতুর উদ্বোধনের পরপরই সেখানে বন্ধ করতে হল যান চলাচল৷ চলতি মাসের 7 ফ্রেব্রুয়ারি থেকে 17 ফেব্রয়ারি পর্যন্ত সেতুর উপর যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:পুলিশ আধিকারিকের নামে ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, টাকা চাওয়ার অভিযোগ
সেতুর ভারবহন ক্ষমতা বা ফিটনেস শংসাপত্র না-করেই উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী? ঝুঁকির আশঙ্কা রেখে উদ্বোধনের পরই যানবাহন চলছে? বিধানসভা নির্বাচনে আগে সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা না করেই তড়িঘড়ি সেতুর উদ্বোধন? ইত্যাদি প্রশ্ন তুলছেন আমজনতা৷ শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই প্রশ্নগুলির উত্তরও চেয়েছেন BJP নেতারা৷
মেখলিগঞ্জ BJP দক্ষিণ মণ্ডল কমিটি সভাপতি দধিরাম রায়, জলপাইগুড়ি জেলা BJP যুবমোর্চার সম্পাদক জ্যোতি বিকাশ রায় এ বিষয়ে তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রীর৷ BJP নেতা দধিরাম রায় জানান, "সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করেই যানবাহন চলাচলের অনুমতি দিল সরকার ৷ জয়ী সেতুর সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় তৈরি, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি বা মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে উদ্বোধন করা হয়, কিন্তু সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করেই নির্বাচনের আগেই রাজনৈতিক কারণে তড়িঘড়ি উদ্বোধন করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণভাবে মানুষ ও যানবাহন চলছে, কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় তৈরি সেতু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে রাজনীতি করছেন তার তীব্র ধিক্কার জানাই।