পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

প্রার্থনা নয়, স্কুল শুরু মদের বোতল সাফাই দিয়ে !

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। অথচ এখন থেকেই চিন্তা স্কুলের অন্য পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে । কারণ স্কুলে এসে প্রথমেই তাদের মদের বোতল, সিগারেটের প্যাকেট আর মাংসের বাটি সরানোর করতে হয় ।

By

Published : Dec 26, 2019, 12:21 PM IST

Updated : Jan 1, 2020, 2:22 PM IST

school
সহশিক্ষকের সঙ্গে পড়ুয়ারা

মেখলিগঞ্জ, 25 ডিসেম্বর : চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র । বয়স ওই 9-10 বছর হবে । কিন্তু এখন থেকেই চিন্তা স্কুলের ছোটো ভাই-বোনদের কী হবে ? তারা কী শিখবে স্কুল থেকে ? কারণ স্কুলে এসে প্রথমেই তাদের মদের বোতল, সিগারেটের প্যাকেট আর মাংসের বাটির মতো বর্জ্য সাফাই করতে হয় । এমনই পরিস্থিতি যে, এই কাজে হাত লাগান শিক্ষক-শিক্ষিকারাও । আর এটা কোনও এক বা দু'দিনের বিষয় নয় । নিত্যদিনই এই কাজ করতে হয় শালতলি এ.পি স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের ।

মেখলিগঞ্জ ব্লকের উঁচলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউতিহাট এলাকার শালতলি এ.পি স্কুল । প্রাইমারি স্কুল হওয়ায় ক্লাস 4 পর্যন্ত পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে । কিছুদিন গেলেই ক্লাস 4-এর পড়ুয়ারা উচ্চশিক্ষার জন্য অন্য স্কুলে ভরতি হবে । আর সেটাই তাদের একমাত্র চিন্তার বিষয় । কিন্তু কেন ?

স্কুলের মাঠে পড়ে মদের বোতল-গ্লাস

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তিথি বর্মণ ও তিথিকণা রায় জানায়, স্কুলে পড়াশোনা যে হয় সে'বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই । শিক্ষকরাও পড়াশোনায় সহযোগিতা করে । কিন্তু আর পাঁচটা স্কুলের মতো প্রথমে তারা প্রার্থনা করে না । স্কুলের মাঠে, ক্লাসঘরে পড়ে থাকা মদের বোতল, সিগারেট প্যাকেট, মাংসের বাটি পরিষ্কার করে । তারপর হয় স্কুলে প্রার্থনা । শুধু পড়ুয়ারা নয়, শিক্ষকরাও প্রথমে স্কুল পরিষ্কার করে । তারপর পঠনপাঠন শুরু হয় । আর সেটাই চিন্তার কারণ ক্লাস ফোরের ছাত্রীদের ।

ক্লাস ফোরের ছাত্রী তিথি বর্মণ বলে, "আমরা তো কিছুদিন পর অন্য স্কুলে চলে যাব । কিন্তু ছোটোরা কী শিখবে ? মদের বোতল, সিগারেটের প্যাকেট পড়ে থাকে । যে'সব ছোটো ছেলেরা রয়েছে তারাও তো এগুলো শিখবে । শুধু আমরা নয়, শিক্ষকরাও পরিষ্কার করে । তাঁরা অপমানিত বোধ করেন ।"

আসলে শালতলি এ.পি স্কুলে কোনও সীমানা প্রাচীর নেই । আর সেই সুযোগে ছুটি হলে স্কুলের মাঠে রাতে মদের আসর বসে । এমনকী, জানালার লোহার রড ভাঁজ করে ক্লাসঘরের ভিতরেও চল মদ খাওয়া । সকাল হলে সেই মদের বোতলই পরিষ্কার করে শিক্ষক ও পড়ুয়ারা । স্কুলের এই পরিস্থিতি ঠেকাতে তাই উঁচু পাঁচিলের দাবি জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়ারা ।

স্কুলে এসে প্রার্থনা নয়, পরিষ্কার করতে হয় মদের বোতল ৷ দেখুন ভিডিয়ো...

স্কুলের সহকারী শিক্ষক জগদীশ শর্মা জানান, স্কুলের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের । স্কুল যেহেতু বাজার এলাকায় তাই প্রধান শিক্ষক অনেকবার সীমানা প্রাচীর তৈরির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন । কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি । অন্যদিকে স্কুলে অশিক্ষক কর্মী নেই । তাই বাধ্য হয়ে শিক্ষক ও পড়ুয়ারা মিলে মদের বোতল থেকে শুরু করে, মাংসের বাটি, সিগারেটের প্যাকেট, তাস, কাচের টুকরো পরিষ্কার করি ।

এ'বিষয়ে স্কুল পরিদর্শক বরুণ বিশ্বাস বলেন, "দায়িত্ব গ্রহণের পরই বিষয়টি শুনি । স্কুলের সীমানা প্রাচীরের জন্য আবেদন করা আছে । কিন্তু BDO অফিসের তরফে কোনও তৎপরতা নেওয়া হয়নি ।"

Last Updated : Jan 1, 2020, 2:22 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details