পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

কোয়ারানটিন সেন্টার থেকে সোজা শ্রীঘর

15 হাজার টাকা খরচ করে সুদূর কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন৷ কিন্তু পাড়া-প্রতিবেশীদের জ্বালায় যেতে হয়েছিল কোয়ারানটিন সেন্টার ৷ কিন্তু কপালের ফেরে কোয়ারানটিন সেন্টার থেকে সোজা শ্রীঘরে ঠাই হল যুবকের ৷

কোচবিহার
কোচবিহার

By

Published : Jun 9, 2020, 5:59 AM IST

কোচবিহার, 8 জুন : সবে স্নাতক হয়ে চাকরির চেষ্টা করছিলেন কোলকাতায় । কিন্তু লকডাউনের শুরু হওয়ায় 15 হাজার টাকা খরচ করে বাড়ি ফেরেন । রেড জ়োন থেকে ফেরায় প্রতিবেশীদের কথায় কোয়ারানটিন সেন্টারে যায় ওই যুবক । সেখান থেকে সোজা জেল । অপরাধ, কোয়ারানটিনে অন্য আবাসিকরা গন্ডগোল । ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের দিনহাটাতে ।

দিনহাটা থানার IC সঞ্জয় দত্ত বলেন, "কোয়ারানটিন সেন্টারে স্বাস্থ্য কর্মীদের সাঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও ভাঙচুরের অভিযোগে 15 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।" কপালের ফেরে তাদের মধ্যে নাম ছিল ওই তারও৷ দিনহাটা শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা বছর 20-এর যুবক কৌশিক সরকার । স্নাতক হয়ে সবে কলকাতায় থেকে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে দাদার সঙ্গে থাকতেন কৌশিক । দাদাও চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । বাঘাযতীন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন দাদ-ভাই । লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় কলকাতায় আটকে পড়েন তারা । দু'মাস আটকে থাকার পর 15 হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে দিনহাটার বাড়িতে ফেরেন কৌশিক ।

কিন্তু সমস্যা তাও মেটেনি৷ প্রতিবেশীদের আপত্তিতে দু'ভাই হাজির হন দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে । হাসপাতালের চিকিৎসক দাদা বিশ্বরূপ সরকারকে হোম কোয়ারানটিনের নির্দেশ দিলেও কৌশিককে দিনহাটা হাসপাতালের কোয়ারানটিনে রাখা হয় । সেখানে ছিল মহারাষ্ট্র ফেরত 14 জন পরিযায়ী শ্রমিক । লালারসের নমুনা সংগ্রহ হলেও রিপোর্ট আসতে দেরি কেন এই অভিযোগে সপ্তাহখানেক আগে একদিন ওই শ্রমিকরা কোয়ারানটিন সেন্টারে বিক্ষোভ শুরু করে ৷ যার জেরে স্বাস্থ্য কর্মীদের সাঙ্গে গন্ডগোল বেধে । এরপরই হাসপাতাল কতৃপক্ষের তরফে দিনহাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় । হাসপাতাল কতৃপক্ষ কয়েক জনের নাম সহ অন্যান্য নাম দিয়ে অভিযোগ দায়ের করে । আর সেই নামের মধ্যে থেকে যায় কৌশিকও ।

রবিবার তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর আজ দিনহাটা থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে । আপাতত কৌশিক জেলে। 14 দিন হাসপাতালের কোয়ারানটিনে থাকার পর নমুনা নেগেটিভ এলেও আপাতত 14 দিন জেল হেপাজতে থাকতে হবে কৌশিককে । কৌশিকের দাদা বিশ্বরূপ সরকার বলেন, "একসঙ্গে দু'জনে কলকাতা থেকে ফিরলাম । আমাকে হোম কোয়ারানটিনে রাখা হল । অথচ ওকে হাসপাতালের কোয়ারানটিন সেন্টারে । ওর নামে অভিযোগ নেই, তবুও পুলিশ গ্রেপ্তার করল।" কৌশিকের বাবা গ্রাম পঞ্চায়েতের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী অভিজিৎ সরকার বলেন, "কেন যে বাড়ি ফিরতে গেল তাই ভাবছি । বাড়ি না ফিরলে আর জেলে যেতে হত না ।" দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের সুপার রনজিৎ মণ্ডল বলেন, "ওইদিন হাসপাতালের কোয়ারানটিন সেন্টারে গন্ডগোল হয় । 15 জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details