কোচবিহার, 21 সেপ্টেম্বর:কে কার সঙ্গে থাকবেন বা থাকবেন না, সেটা একেবারেই তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় ৷ এ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) কোনও মাথাব্যাথা নেই ৷ বুধবার গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মন (Bangshi Badan Barman) সম্পর্কে এমনই মন্তব্য করলেন কোচবিহারের প্রবীণ তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindra Nath Ghosh) ৷
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই একটি কর্মসূচির মঞ্চ থেকে বংশীবদন বর্মন তৃণমূলের পাশ থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ৷ পাশাপাশি, গ্রেটার নেতা অনন্ত রায় মহারাজের (Ananta Roy Maharaj) সঙ্গে হাত মেলানোরও আভাস দিয়েছিলেন তিনি ৷ তার 24 ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই রবীন্দ্রনাথ বলেন, বংশীবদন বর্মন "কার সঙ্গে থাকবেন, আর কার সঙ্গে যাবেন, সেটা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার ৷ এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তৃণমূল ওঁদের উপর ভরসা করে না ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেন ৷"
আরও পড়ুন:বাংলা ভাগ ইস্যুতে বিজেপিকে কটাক্ষ সেলিমের
দীর্ঘদিন ধরেই পৃথক কোচবিহার রাজ্য গঠনের দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন করে চলেছে গ্রেটারের বিভিন্ন সংগঠন ৷ পরবর্তীতে আবার এই দাবিকে কেন্দ্র করেই তাদের মধ্য়ে বিভেদ তৈরি হয় ৷ নানা শাখায় ভেঙে যায় সংগঠনগুলি ৷ তেমনই একটি সংগঠন হল, গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ৷ এর একটি শাখার নেতৃত্বে রয়েছেন বংশীবদন ৷ এই সংগঠন বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক ৷ এমনকী, রাজ্য সরকার যে রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ড গঠন করেছে, তারও চেয়ারম্যান করা হয়েছে বংশীবদন বর্মনকে ৷
বংশীবদন বর্মনকে পাত্তা দিতে নারাজ রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ৷ অপরদিকে, অনন্ত মহারাজ নেতৃত্বাধীন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বিজেপি-এর সখ্য রয়েছে ৷ নির্বাচনী প্রচারেও তাদের নেতাদের বিজেপি-এর হয়ে গলা ফাটাতে দেখা গিয়েছে ৷ সম্প্রতি অনন্ত মহারাজ দাবি করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে কথা দিয়েছেন উত্তরবঙ্গকে পৃথক কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করা হবে ! এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি ৷
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে বংশীবদন বর্মন বলেন, "আমি এখনও তৃণমূলের পাশে আছি ৷ তৃণমূলকে সমর্থন জানিয়েছি ৷ অপরদিকে, আমাদেরই আর একটি গোষ্ঠী, অনন্ত মহারাজের নেতৃত্বে তারা বিজেপি-কে সমর্থন জানিয়ে আসছে ৷ দেখা যাচ্ছে, আদতে দুই রাজনৈতিক দলই দু'জনকে ব্যবহার করছে ৷ তাই বৃহত্তর কোচবিহারের মানুষের স্বার্থে এবার আমাদের একজোট হওয়ার সময় এসেছে ৷ সেই লক্ষ্যেই অনন্ত মহারাজের কাছে একসঙ্গে চলার আবেদন জানিয়েছি ৷ প্রয়োজনে তৃণমূলের পাশ থেকে সরে যাব ৷" বংশীবদনের এই বক্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে ৷ যদিও প্রকাশ্য়ে বিষয়টিকে পাত্তা দিতে নারাজ রবীন্দ্রনাথ ঘোষরা ৷