কোচবিহার, 25 সেপ্টেম্বর : লকডাউনে সবজির দাম মেলেনি । আমফানে নষ্ট হয়েছে সবজি থেকে ধান । এবার লাগাতার বৃষ্টিতে বিঘার পর বিঘা আমন ধানের জমি জলের তলায় । ফুলকপি ও বাঁধাকপি সহ বিভিন্ন সবজির চারা লাগানোর জন্য পুলি তৈরি করা হলেও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সব । এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা জেলার কয়েক লাখ চাষি । চাষিদের কথায়, আমন ধানের নিচু জমি জলের তলায় । সবজি চাষ শুরু করলেও জমিতে জল জমে সব নষ্ট হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে আগামীতে কীভাবে দিনযাপন করব তা ঈশ্বরই জানেন ! কৃষিবিভাগও জানিয়েছে, সবজি চাষে ভালো ক্ষতি হচ্ছে । বৃষ্টি না কমলে আমন ধানেরও ক্ষতি হবে ।
কোচবিহার জেলা কৃষিবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার 12 টি ব্লকে 1 লাখ 14 হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে । এইসময় জমিতে চাপান সার দেওয়া হয় । কিন্তু লাগাতার বৃষ্টিতে নিচু জমিতে লাগানো আমন ধানের খেত জলের তলায় চলে গিয়েছে । এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা জেলার আমন ধানের চাষিরা ।
পেটলার আমন চাষি লতিফ মিঞা বলেন, "লাগাতার বৃষ্টিতে এখন আর চাপান সার দেওয়া যাবে না ।"
লাগাতার বৃষ্টিতে জলের তলায় জেলার অধিকাংশ খেত, কী বলছেন চাষিরা ? বড় বোয়ালমারি গ্রামের চাষি ইব্রাহিম মিঞা বলেন, "5 বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি । গত একমাসে এই নিয়ে দু'বার জমি জলের তলায় গেল । কী হবে জানি না ।"
আমন ধানের পাশাপাশি সবজি চাষেও ব্যাপক ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে । জেলায় 40 হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয় ৷ যার বড় অংশ শীতকালে চাষ হয় । এইসময় ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলো, পালংশাক, টমেটোর চাষ শুরু হয় । পুজোর মুখে ওইসব সবজি বাজারে আসতে শুরু করে । কিন্তু লাগাতার বৃষ্টিতে সবজি চাষে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে । কোথাও ফুলকপি, বাঁধাকপির পুলি বীজতলাতেই জলে নষ্ট হয়েছে । কোথাও জমিতে চারা লাগানোর পর তা জলে নষ্ট হয়েছে । আবার কোথাও জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে পুলি লাগানোই যায়নি ।
চাষি আবদুল্লাহ আজিজ বলেন, "জমিতে বাঁধাকপি ও ফুলকপির পুলি লাগানো হয়েছিল । নষ্ট হয়ে গিয়েছে ।"
বড় বোয়ালমারি গ্রামের সবজি চাষি সায়রা বানু বলেন, "কপির চারা লাগানোর জন্য জমি তৈরি করেছিলাম । কিন্তু দফায় দফায় বৃষ্টির কারণে জমিতে জল জমে যায় । ফলে পুলি আর লাগানো যায়নি । বীজতলাতেই পুলি বড় হয়ে নষ্ট হয়েছে ।"
আরেক সবজি চাষি মোস্তফা রহমান বলেন, "হাজার ছয়েক টাকার সবজির বীজতলা তৈরি করেছিলাম । বৃষ্টিতে বীজতলাতেই সব শেষ ।"
এই বিষয়ে জেলার অ্যাসিস্টান্ট ডিরেক্টর অব এগ্রিকালচার অরুণ কুমার বসু বলেন, "জল নেমে গেলে ধানের খুব বেশি ক্ষতি হবে না । তবে সবজিতে ভালোই ক্ষতি হবে ।"