কোচবিহার, 9 অক্টোবর : সরকারি হাসপাতাল । কিন্তু অস্ত্রোপচারের আগে জমা করতে হয় টাকা । রোগীর পরিবারের থেকে টাকা নেন স্বয়ং চিকিৎসকই । অভিযুক্ত চিকিৎসক নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন এই কথা । টাকা ফিরিয়েও দেবেন বলেছেন । ঘটনা মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের । গতকাল বিক্ষোভ দেখান রোগী এবং রোগীর পরিজনরা ।
অভিযোগ, টাকা দিতে বাধ্য হয় রোগীর পরিবার । কারণ টাকা না দিলে না কি হবেই না অস্ত্রোপচার । বৃহস্পতিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে । অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম সুব্রত রায় । হাসপাতালে সার্জেন পদে কর্মরত ।
মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে বেড সংখ্যা 120 । চিকিৎসকের সংখ্যা 16 । সুব্রত রায়ের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে অস্ত্রোপচারের অভিযোগ আসছিল দীর্ঘদিন ধরেই । এবার সেই অভিযোগেই বিক্ষোভ দেখান রোগী আত্মীয় এবং এলাকার বাসিন্দারা ৷ অভিযোগ, মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসকই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অস্ত্রোপচার করছেন । টাকা না দিলে অস্ত্রোপচার হচ্ছে না । কোনও রোগী টাকা দিতে না পারলে তাঁকে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে ৷
অভিযোগ স্বীকার করেন চিকিৎসক... মেখলিগঞ্জের ভোটবাড়ির এক রোগীর থেকে অস্ত্রোপচার বাবদ 10 হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে । এই অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে শামিল হন রোগীর আত্মীয় এবং বাসিন্দারা ৷ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন ভোটবাড়ির বাসিন্দা দিলীপ বসাক । তিনি বলেন, তাঁর ছেলে সুমন্ত বসাকের অ্যাপেনডিক্স-এর সমস্যা আছে । তিনি ওই চিকিৎসকের কাছে ছেলেকে দেখান । মঙ্গলবার মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে তাঁর ছেলের অস্ত্রোপচার করেন ওই চিকিৎসক । সেই অস্ত্রোপচার বাবদ তাঁর কাছে 10 হাজার টাকা নেন । টাকা ছাড়া কোনও প্রকারের অস্ত্রোপচার করতে রাজি নন চিকিৎসকরা ৷
বিক্ষোভের জেরে অভিযুক্ত চিকিৎসক সুব্রত রায় অভিযোগ স্বীকার করেন । বলেন, "যাঁদের টাকা নিয়েছি তা ফিরিয়ে দেব ৷" হাসপাতালের সুপার কাশীনাথ পাঁজাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় । তিনি বলেন, ওই চিকিৎসক টাকা নিয়ে থাকলে তা অন্যায় । যদি তিনি এই কাজ করে থাকেন তবে তিনি অন্যায় করেছেন । ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি । মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র অধিকারি জানান, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে ৷
সরকারি হাসপাতালের অস্ত্রোপচারের জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে । এই বিষয়ে কী বলছে জেলা প্রশাসন । মেখলিগঞ্জ মহকুমাশাসক রামকুমার তামাঙ বলেন, "বিষয়টি সম্পর্কে হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে । খোঁজ নিচ্ছি ৷"