কোচবিহার, 28 জুন : জেলায় কোনও প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র না থাকায় উৎপাদিত ভুট্টা কলকাতা ও অন্যান্য রাজ্য যেনম অসম, বিহারে রপ্তানি হয় । বাইরের ব্যবসায়ীরা এসে সেই ভুট্টা কিনে নিয়ে যান । কিন্তু লকডাউনের জেরে বাইরের ব্যবসায়ীরা জেলায় না আসায় ভুট্টার বাজারদর অনেকটাই কম । এতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কোচবিহার জেলার প্রায় এক লাখ ভুট্টা চাষির । তাঁদের বক্তব্য, লকডাউনের জেরে বাইরের ব্যবসায়ীরা না আসায় ভুট্টার বাজারদর কুইন্টালপিছু প্রায় হাজার টাকা কম । এতে অনেকটাই ক্ষতি হচ্ছে । যদিও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, লকডাউন উঠতে থাকায় এবার হয়ত বাইরের ব্যবসায়ীরা আসবেন । বাড়বে ভুট্টার বাজারদর ৷
কোচবিহার জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এবছর 32 হাজার বিঘা কৃষিজমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে । এই চাষের সঙ্গে যুক্ত প্রায় 90 হাজার চাষি । এবছর জেলায় মোট ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে 1 লাখ 80 হাজার টন । দিনহাটা-2, কোচবিহার-1,কোচবিহার-1, তুফানগঞ্জ-1, মাথাভাঙা-1 ব্লকে মূলত ভুট্টা চাষ হয়ে থাকে । কয়েক বছর আগে পর্যন্ত জেলায় এত পরিমাণ ভুট্টা চাষ হত না । কিন্তু ধানের দাম না মেলায় বিকল্প চাষ হিসাবে ভুট্টা চাষের দিকে ঝোঁকে কোচবিহার জেলার একটা বড় অংশের কৃষক ।
ফলন ভালো হলেও ক্ষতির মুখে কোচবিহারের ভুট্টা চাষিরা এবছর ভুট্টা চাষের পরিমাণ যেমন বেড়েছে ফলনও ভালো হয়েছে । কিন্তু লকডাউনের জেরে বাজারদর নেই । গতবছর এসময় ফলন ওঠার পর কুইন্টাল প্রতি 1800-2000 টাকায় বিক্রি হয়েছে । এবার 1000-1200 টাকা কুইন্টাল বিক্রি হচ্ছে । কোচবিহার-1 ব্লকের ভুট্টা চাষি আখতারউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘লকডাউনের কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা আসছেন না । তাই বাজারদর অনেকটাই কম ।’’ তুফানগঞ্জ -1 ব্লকের ভুট্টা চাষি সন্তোষ বোস বলেন, ‘‘জেলায় প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র না থাকায় বাইরের ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভর করতে হয় । কিন্তু লকডাউনের জেরে বাইরের ব্যবসায়ীরা আসছেন না । ফলে, ভুট্টার বাজারদর অনেকটাই কম ।’’ জেলার অধিকাংশ ভুট্টা চাষির বক্তব্য, চাষের খরচ তোলার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে ভুট্টা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ।
যদিও কোচবিহারের ডেপুটি ডিরেক্টর অব এগ্রিকালচার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অরুণ কুমার বোস বলেন, ‘‘এবছর ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে । কিন্তু লকডাউনের কারণে হাট-বাজার ঠিকমতো হচ্ছে না । বাইরের ব্যবসায়ীরা আসছেন না । তাই দাম কম । তবে লকডাউন উঠতে থাকায় ব্যবসায়ীরা আসলে ফের বাজারদর বাড়বে । আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি ।’’