কোচবিহার, 25 জুন : সাড়াশি চাপে কোচবিহার জেলার কয়েক লাখ চাষি। প্রথমে লকডাউনের কারণে দাম না পেয়ে সবজি ফেলে দিতে হয়। তারপর আমফানের দাপট ৷ জেলায় লাগাতার ঝড় ও বৃষ্টি। নষ্ট হয়েছে প্রচুর ফসল । প্রাথমিকভাবে ব্লকগুলো থেকে যে হিসাব এসেছে, তাতে ক্ষতির পরিমাণ 10 কোটি টাকারও বেশি। পুরো হিসাব এলে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে কৃষি দপ্তরের ধারণা।
আমফান ও তার পরেও লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে ৷ এর জেরে কোচবিহার জেলায় 52 টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলায় প্রায় 42 হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে । মোট ধান উৎপাদন হওয়ার কথা 2 লক্ষ 10 হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু, অতিবৃষ্টিতে চাষের নিচু জমিতে জল জমে গিয়েছে । ফলে নষ্ট হচ্ছে ধান। এছাড়া জেলায় 30 হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। বৃষ্টির জেরে ভুট্টা ক্ষেতে জল জমে গিয়েছে । রোদ না ওঠায় ভুট্টা তুললেও রোদে দিতে পারছে না চাষিরা । সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষে। জেলায় 60 হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। বিশেষ করে বর্ষাতি বেগুন,করলা,ভেন্ডি,শসা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় 10 কোটির বেশি টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কৃষিদপ্তরের প্রাথমিক ধারণা। বোয়ালমারি গ্রামের ভুট্টা চাষি গোকুল চন্দ্র দাস জানান, বৃষ্টির কারণে ভুট্টার অনেকটা ক্ষতি হচ্ছে।
লকডাউনের পর আমফান, কোচবিহারের চাষিদের মাথায় হাত
প্রথমে লকডাউন ৷ তারপর আমফান ৷ চাষিদের মাথায় হাত ৷ লকডাউনের ফলে বাইরের গাড়ি রাজ্যে আসেনি ৷ ফলে বাইরে পাঠানো যায়নি সবজি ৷ এর ফলে দাম না মেলায় ফেলে দিতে হয়েছে সবজি ৷ তারপর যেটুকু ঘুরে দাঁড়ানো তাও শেষ হয়ে গিয়েছে আমফানের দাপটে ৷
ভেটাগুড়ির বেগুন চাষি কমল দাস বলেন, "এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছিলাম। 20 হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দু হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। বাকি আমফানের দাপটে সব শেষ। করলা ও শসা চাষি সাহের আলি বলেন, "লকডাউনের সময় বাইরের গাড়ি না আসায় সবজির দাম ওঠেনি ৷ তাই সবজি বাজারে ফেলে দিয়েছি। এখন বাইরের গাড়ি আসছে ৷ সবজি বাইরে পাঠাতেও শুরু করেছিলাম। দামও মিলছিল। কিন্তু ঝড় ও বৃষ্টিতে সব শেষ।"
কৃষি দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর অব এগ্রিকালচার (অ্যাডমিন) অরুণ কুমার বসু বলেন," অতিবৃষ্টিতে কৃষিতে 10 কোটির বেশি টাকার ফসল ক্ষতি হয়েছে। বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হয়েছে।"