পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

"সরকার আমাদের দেখবে ?", বনভূমি পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্তে চিন্তায় কৃষকরা - wb forest department latest news

সম্প্রতি প্রায় আটশো বিঘা জমি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বনবিভাগ । কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের জলঢাকা নদী তীরবর্তী এলাকা ৷ পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মানুষ নির্বিচারে ওই বিরাট বনভূমি সাফ করে কৃষিজমি ,বসত বাড়ি , বাগান তৈরি করেছে ৷ বনবিভাগের উদ্যোগে শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে জমি জরিপের কাজ ৷ ওই আটশো বিঘার মধ্যেই কোথায় আবার কিছু কৃষক তাঁদের পূর্বপুরুষের কাছে প্রাপ্ত জমিতে চাষবাস করছেন ৷ প্রশ্ন উঠছে তাঁদের জীবন জীবিকা নিয়েও ৷

সরকার আমাদের দেখবে কি ! বনভূমি পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্তে চিন্তার ভাঁজ কৃষকদের

By

Published : Nov 10, 2019, 3:22 PM IST

কোচবিহার, 10 নভেম্বর : প্রায় আটশো বিঘা জমিতে অতীতে ছিল বনাঞ্চল ৷ পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মানুষ নির্বিচারে ওই বিরাট বনভূমি সাফ করে কৃষিজমি ,বসতবাড়ি , বাগান তৈরি করেছে ৷ বনবিভাগের উদ্যোগে শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে জমি জরিপের কাজ ৷ শুরু হয়েছে বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ৷ ঘটনাস্থান কোচবিহারের রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সারোহাঁটি এলাকা ৷ ওই আটশো বিঘার মধ্যেই কোথাও আবার কিছু কৃষক তাঁদের পূর্বপুরুষের কাছে প্রাপ্ত জমিতে চাষবাস করছেন ৷ বনভূমি পুনরুদ্ধারের কাজে ওই কৃষকদের জীবিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন ৷

বনবিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, 2001 সালের আগেই গোটা এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিয়ে এলাকাজুড়ে ছিল বিরাট একটি বনাঞ্চল ৷ প্রায় আটশত বিঘা জমির উপর ছিল এই বনভূমি ৷ মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই জলঢাকা নদীর ভাঙন , মানুষের নির্বিচারে বৃক্ষছেদন ,পশুপালন এই এলাকার বনাঞ্চল নষ্ট করে দেয় ৷ ছোটো-বড় সব গাছ কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে ৷ বর্তমানে কিছু জমি ছাড়া পুরো এলাকায় চলছে বিভিন্ন সময়ের কৃষিকাজ ৷ খুবই অল্প সময়ে মানুষের সীমাহীন চাহিদায় শেষ হতে বসেছে এই বনভূমি ৷ বনভূমির গাছ কেটে করা হচ্ছে কৃষি জমি, পশুচারণ ক্ষেত্র ৷ পুরো এলাকায় কোথাও কৃষিকাজ , কোথায় বাড়ি , আবার কোথাও বাগান বানিয়ে ফেলেছেন স্থানীয় মানুষজন ৷ ঘটনা নজরে আসতে দ্রুত বনভূমি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করা হয় বনবিভাগের তরফে ৷

স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি এখানে শুধু বনভূমি ছিল না ,এখানে তাঁদের পূর্বপুরুষদের নিজের জমি ছিল ৷ চাষবাসও হত কিছু এলাকায় ৷ কিন্তু ,তাঁদের হাতে নথিপত্র নেই ৷ অনেকই জানান, "গাছ লাগানো ভালো ৷ তবে আমাদের চাষের জমিতে সরকার গাছ লাগিয়ে দিলে, যাব কোথায় আমরা? ওই জমিতে চাষবাস করেই আমাদের জীবন জীবিকা চলে ৷ আমরা যাব কোথায় ? কী ভাবে দিন চালাব ? সরকার আমাদের দেখবে কি ?" এমনই অভিযোগ বেশ কিছু বাসিন্দার ৷ তবে , ওই এলাকার অনেকই আবার কিছু অংশ জমিতে গাছ লাগানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ৷ আগ্রহী কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে গতকাল শুরু হয় জমির GPS ও জরিপের কাজ ৷

ভিডিয়োয় দেখুন কী বলছেন এলাকাবাসীরা

ওই জমির জরিপ শুরু হয় শনিবার থেকেই । কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের জলঢাকা নদী তীরবর্তী ওই এলাকায় সম্প্রতি আটশো বিঘা জমি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বনবিভাগ । প্রথম দফায় আপতত 225 বিঘা জমিতে বনসৃজন করবে বনবিভাগ । আগামী 2020 সাল নাগাদ বনসৃজনের কাজ শুরু হবে । গতকাল জমি জরিপের সময় ঘটনাস্থানে উপস্থিত ছিলেন মাথাভাঙা রেঞ্জ অফিসার সজল পাল, মাথাভাঙা বিট অফিসার বাবলু দাস, জামালদহ বিট অফিসার সুদীপ্ত তালুকদার ও রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফুলেশ্বর রায় ।

মাথাভাঙা ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার সজল পাল জানিয়েছেন, "আপাতত 225 বিঘা জমিতে বনসৃজনের কাজ শুরু করা হবে । পরবর্তীকালে বাকি জমিতে বনসৃজন করা হবে । তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, বর্তমানে ওই সব জমিতে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ চাষাবাদ করে সংসার নির্বাহ করেছে ,সবার সঙ্গে কথা বলেই করা হবে বনায়নের কাজ ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details