কোচবিহার, 20 জুলাই:মাথার উপর টিনের ছাউনি ৷ চারিদিকে বেরা দিয়ে ঘেরা ছোট্ট একটি ঘর ৷ তাতেই বাস মা ও ছেলের ৷ আট বছর আগে এক 21 জুলাইয়ে তাঁরা হারিয়েছেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে ৷ তিনি ছিলেন তৃণমূলের সমর্থক ৷ সহেন্দ্র দাস যোগ দিতে গিয়েছিলেন 21 জুলাইয়ের সমাবেশে ৷ কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি তাঁর ৷ সমাবেশ থেকে ফেরার পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তুফানগঞ্জ-2 নম্বর ব্লকের শালবাড়ি-1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্জি পাড়া এলাকার এই বাসিন্দার ।
আজ বাদে কাল ফের একটা 21 জুলাইয়ের সমাবেশ ৷ কোচবিহার থেকে হাজার হাজার কর্মী সমর্থক বিভিন্ন ট্রেনে চেপে রওনা দিয়েছেন কলকাতায় । আর এই 21 জুলাইয়েও স্বামীর স্মৃতি আঁকড়ে কুড়ে ঘরের আড়ালে বসে শুধুই চোখের জল ফেলছেন গীতিকা দাস । তিনি জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর প্রথম দিকে খোঁজখবর রেখেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্বরা ৷ কিন্তু তারপর থেকে একুশে জুলাই আসে যায় ৷ কেউ খোঁজ রাখে না তাঁর মতো হতভাগ্য স্ত্রী এবং তাঁর ছেলের । তাই একুশে জুলাই এলেই স্বামীর উপস্থিতি আরও বেশি করে টের পান গীতিকা ৷ তখন তাঁর ভরসা বলতে থাকে কেবল চোখের জল ৷ বুঁকে জড়িয়ে ধরেন স্বামীর ছবিকে ৷ সব কষ্টকে চোখের জলের মাধ্যমে বেরিয়ে যেতে দেন ৷
গীতিকা স্বীমার শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই হারিয়েছেন বড় ছেলেকে ৷ তাই চোখের জলই যেন তাঁর এখন বাঁচার রসদ ৷ না পেয়েছেন স্বামীর মৃত্যুর শংসাপত্র হাতে ৷ না কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা । এ ব্যাপারে ছোট ছেলে সুরজিৎ দাস বলেন, "বাবার মৃত্যুর পর নয় মাসের মাথায় বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে দাদার । তারপর থেকেই সংসারের হাল আমার উপর ৷ তাই বাধ্য হয়েই দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেই দিনমজুরির কাজ করতে হয়েছে আমাকে। বাবার মৃত্যুর সার্টিফিকেটও মেলেনি এখনও ৷ ফলে পাইনি কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা ৷ দলীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে শুধুই জুটেছে অপমান ।"