পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Sitalkuchi Triple Murder: প্রেমে প্রত্যাখান মানতে না পেরেই খুন ! 'স্বীকারোক্তি' শীতলকুচি কাণ্ডে ধৃত যুবকের

তিন-তিনটি খুন করেও নির্বিকার শীতলকুচি কাণ্ডে ধৃত বিভূতিভূষণ রায় ৷ বর্তমানে কোচবিহারের এম জে এন হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন তিনি ৷ হাসাপাতালে শুয়ে কী বললেন এই যুবক ?

Confession of Main Accused in Sitalkuchi Triple Murder case
খুন করেও নির্লিপ্ত বিভূতি

By

Published : Apr 7, 2023, 6:13 PM IST

অবলীলায় খুনের কথা স্বীকার ধৃতের

কোচবিহার, 7 এপ্রিল: একদিকে প্রেমে প্রত্যাখ্য়াত হওয়ার 'অপমান', অন্যদিকে প্রেমিকার বাবার অনুগামীদের হাতে মার খাওয়ার ভয় ! মূলত এই দুই কারণেই শুক্রবারের 'অপারেশন' চালিয়েছিলেন বছর একুশের যুবক বিভূতিভূষণ রায় ৷ যার জেরে নৃশংসভাবে খুন হতে হয় প্রেমিকার বাবা, মা ও দিদিকে ৷ এমনকী, প্রেমিকের হামলা থেকে রক্ষা পাননি তাঁর 'প্রেয়সী'ও ৷ হাসপাতালে শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনিও ৷ তবে, এতকিছুর পরও কোনও তাপোত্তাপ নেই অভিযুক্ত প্রেমিকের ৷ ধরা পড়ার পর কোচবিহারের এম জে এন হাসপাতালে শুয়ে অবলীলায় জানালেন সেই কথা ! শীতলকুচির ঘটনায় সামনে এল এমনই তথ্য !

শুক্রবার সকালে ফের একবার সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে কোচবিহারের শীতলকুচি ৷ জানা যায়, খুন হয়েছেন এলাকার তৃণমূল নেত্রী তথা পঞ্চায়েত সদস্যা নীলিমা বর্মন এবং তাঁর স্বামী বিমল বর্মন ৷ বিমলও এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ৷ পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁদের বড় মেয়ে রুনা বর্মনেরও ৷ প্রাথমিকভাবে জানা যায়, নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে এই তিনজনকে ৷ ঘটনায় জখম হন বর্মন পরিবারের ছোট মেয়েও ৷ আপাতত হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন তিনি ৷

তদন্ত প্রক্রিয়া যেটুকু এগিয়েছে, তাতে পুলিশ জানতে পেরেছে, তিন-তিনটে খুনের পিছনে রয়েছে এক ব্যর্থ প্রেমের কাহিনি ! সেই ব্যর্থ প্রেমিকই হলেন বিভূতিভূষণ রায় ৷ যুবকের দাবি, বর্মন দম্পতির ছোট মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল গত 4 বছর ধরে ৷ হঠাৎই ওই তরুণী এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে চান ৷ সূত্রের দাবি, এই সম্পর্কে মেয়েটির বাবা-মায়ের অমত ছিল ৷ সেই কারণেই সম্পর্কে ভাঙতে চেয়েছিলেন তরুণী ৷ কিন্তু, বিভূতি এই প্রত্যাখ্যান মেনে নিতে পারেননি ৷ উপরন্তু, প্রেমিকা তাঁকে ভয় দেখিয়েছিলেন, তাঁর বাবার অনুগামীরা তাঁকে মারবেন !

এই প্রসঙ্গে বিভূতি বলেন, "ও বলেছিল, ওর বাবা আমাকে মারবে ৷ আমি তাই ভাবলাম, দেখাই যাক, কে কাকে মারে ! ওদের বাড়ি গেলাম ৷ প্রথমে ওর বাবাকে মারলাম, তারপর হাতাহাতি হল ৷ তারপর ওর মাকে মারলাম, তারপর ওর দিদিকে মারলাম, তারপর ওকে ৷ এভাবেই !" প্রসঙ্গত, বিভূতির প্রেমিকা এই ঘটনায় জখম হলেও এখনও পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসা চলছে ৷ বিভূতির দাবি, প্রেমিকার বাবা-মা বা দিদিকে মারার তেমন কোনও ইচ্ছা তাঁর ছিল না ৷ তিনি শুধুমাত্র প্রেমিকাকেই মারতে চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু, পরিবারের বাকিরা তাঁর সামনে পড়ে যায় ৷ তাই তাঁদেরও শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ! কারণ, সেই পরিস্থিতিতে তাঁর আর অন্য কিছু করার কথা মাথায় আসেনি ! বিভূতি জানিয়েছেন, তিনি বেকার ৷ পড়াশোনা আগে করতেন ৷ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, খুনের কথা মাথায় এল কেন ? জবাবে বিভূতি বলেন, "এল ! কীভাবে এল, কী করে বলব !"

উল্লেখ্য, এদিন সকালে বিভূতিকে স্থানীয় বাসিন্দারাই ধরে ফেলেন ৷ পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ অন্যদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা একাধিকবার ঘটনাস্থলে যান ৷ তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিভূতিভূষণ রায়-সহ মোট তিনজনকে আটক করা হয়েছে ৷ ঘটনার তদন্ত চলছে ৷ ঘটনাস্থলে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দলও আসতে পারে ৷

আরও পড়ুন:বড় মেয়ে-সহ সস্ত্রীক তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে 'খুন', অভিযুক্ত ছোট মেয়ের প্রেমিক

এদিকে, কোচবিহার জেলা তৃণমুল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক দাবি করেছেন, এই খুনের পিছনে বিজেপির মদত রয়েছে ৷ বর্মন দম্পতির এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব ছিল ৷ তাঁরা যাতে দলের হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ না করতে পারেন, তার জন্যই না কি তাঁদের খতম করে দেওয়া হল ! জবাবে বিজেপির কোচবিহারের জেলা সম্পাদক দীপা চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ তদন্ত করলেই পুরো ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যাবে ৷ অন্যদিকে, ধৃত বিভূতি স্পষ্ট জানিয়েছেন, শুধুমাত্র প্রেমে প্রত্যাখ্য়ান ও প্রেমিকার বাবার অনুগামীদের হাতে মার খাওয়ার আশঙ্কা থেকেই তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details