কোচবিহার, 1 সেপ্টেম্বর: কোচবিহারে ছেলেধরা সন্দেহে গণধোলাই খেলেন বাংলাদেশি এক যুবক । গাছে বেঁধে পেটানো হল তাঁকে । পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে ৷
বৃহস্পতিবার রাতে হলদিবাড়ি ব্লকের অন্তর্গত খালপাড়া মোড় এলাকায় এক অপরিচিত ব্যক্তিকে মুখে গামছা পেঁচানো অবস্থায় দেখে স্থানীয় কিছু মানুষের সন্দেহ হয় ৷ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোনও কথা না বলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা হয় যে তিনি একজন ছেলেধরা ৷ এরপরই তাঁকে মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন স্থানীয়রা । খবর দেওয়া হয় হলদিবাড়ি থানায় । পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে হলদিবাড়ি গ্ৰামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসে ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তির নাম মহম্মদ মোস্তাকিন । প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় । প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ধৃত ওই ব্যক্তির বাড়ি বাংলাদেশের শিবগঞ্জ, চাঁপাই থানা ব্লকে ৷ কাঁটা তারের বেড়া পার করে আসার সময় খালপাড়ায় বাসিন্দারা তাঁকে ধরে ফেলেন ।
স্থানীয় বাসিন্দা তাপস সরকার বলেন, "রাতে মুখে গামছা পেঁচিয়ে একজন লোক সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন । তখন এলাকার লোকজন তাঁকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কিছু না বলায় সবার সন্দেহ হয় । এরপর তাঁকে গাছে বেঁধে পুলিশকে খবর দেওয়া হয় । পুলিশ এসে তাঁকে নিয়ে গিয়েছে ।"
অপরদিকে, মহম্মদ মোস্তাকিন বলেন, "হঠাৎ করেই কিছু লোক খালপাড়া এলাকায় আমাকে ধরে মারধর করে । কেন মারধর করল বুঝলাম না ।" হলদিবাড়ি থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । বেশকিছুদিন ধরেই ছেলেধরা সন্দেহে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায় । গ্রামে সন্দেহজনকভাবে অপরিচিত কারওকে ঘোরাফেরা করতে দেখলেই ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হচ্ছে । গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের তরফে সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে । গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে ।
আরও পড়ুন:ফের চোর সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগ, এবার মালদা ও জলপাইগুড়িতে
এরইমধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের হলদিবাড়ি খালপাড়া দিয়ে ওই ব্যক্তি ভারতে প্রবেশের পর সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করায় তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ । কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।