কোচবিহার, 6 জুন : বছরখানেক আগে বয়সের কোটা 80 পেরিয়েছে । এখন আর আগের মতো শরীরে জোর নেই । তবে, মনে জোর কমেনি একটুকুও । তাই এখনও শখের আম ও লিচু গাছগুলির দেখাশোনা নিজেই করেন কোচবিহারের মনসুর মিঞা ।
ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন মনসুর মিঞা । নিজেদের অধিকার আদায় করতে দিনের পর দিন আন্দোলন করেছেন । পরে সময় বদলেছে । বিনিময় হয়েছে ছিটমহলের । থেমেছে আন্দোলন । সঙ্গে বয়স বেড়েছে মনসুর মিঞার । কিন্তু মনে উদ্যম আর জোর কিছুই কোনও অংশে কম নয় । তাই তো ছিটমহল বিনিময় আন্দোলন শেষ হয়ে গেলেও নিজের জীবনের আন্দোলন এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন । 81 বছর বয়সেও নিজের হাতেই দেখাশোনা করে চলেছেন নিজের শখের আম ও লিচু গাছের ।
মনসুর মিঞার পরিবারের তরফে জানা যায়, তাঁর গাছ লাগানোর শখ রয়েছে । সেই থেকেই দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির আম ও লিচু গাছ এনে বাড়িতে লাগাতেন । এখন সেই গাছগুলির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় 70-এর অধিক । জীবন সায়াহ্নে এখন এই 70 অধিক গাছগুলিই হয়ে দাঁড়িয়েছে মনসুর মিঞার প্রাণ ভ্রমর । দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই গাছগুলির সঙ্গে সময় অতিবাহিত করেন তিনি ।
ছিটমহল আন্দোলনকারী অশীতিপর মনসুরের সঙ্গী আম-লিচু গাছ কোচবিহার জেলার পোয়াতুর কুঠি গ্রামে থাকেন মনসুর । এই গ্রাম বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া । দীর্ঘদিন ধরে গাছ লাগাতে লাগাতে এখন তাঁর বাড়িতে 25 প্রজাতির 52 টি আম গাছ রয়েছে । যার মধ্যে যেমন ল্যাংড়া, হিমসাগর, আলফানজ়োর গাছ রয়েছে তেমনি রয়েছে আম্রপালি, মল্লিকা ও চৌষার গাছও । একইসঙ্গে রয়েছে 12 প্রজাতির 21টি লিচু গাছ । এই গাছগুলির কয়েকটি যেমন উত্তরবঙ্গের তেমন আবার কিছু গাছ বিহার থেকেও এনে তিনি লাগিয়েছেন ।
বাড়ির গাছের লিচু বিক্রি করলেও আম বিক্রি করেন না মনসুর । বিনামূল্যেই গ্রামের বাসিন্দাদের খাওয়ান । মনসুরের এই কাজে খুশি পরিবারও । তাঁর ছেলে থেকে পরিবারের সকলেই নানাভাবে এই আম ও লিচু গাছ পরিচর্যায় সাহায্য করেন মনসুরকে ।