পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

লটারির টিকিট বেচে পরিবারের অন্ন জোগাড়ে ব্যস্ত মাথাভাঙার ছোট্ট পার্থ - boy selling lottery ticket to run his family

পার্থ চক্রবর্তী ৷ বাড়ি কোচবিহারের মাথাভাঙার গোপালপুর গ্রামে ৷ জলে ডুবে বাবার মৃত্যু হয়েছে কয়েকমাস আগে ৷ সংসারে হাল ধরেছে নিজেই ৷ দিনভর লটারি টিকিট বেচে সংসার চালায় মাথাভাঙার পার্থ ৷

ছবি

By

Published : Nov 7, 2019, 2:11 PM IST

Updated : Nov 8, 2019, 3:23 PM IST

কোচবিহার, 7 নভেম্বর : জলে ডুবে মারা গেছে বাবা ৷ পরিবারে মা ও ছয় ভাইবোন ৷ দুই দিদির মধ্যে একজন পড়ে ইলেভেনে, অন্যজন ক্লাস এইটে ৷ বিধবা মা ঘরে একা ৷ বাবা মারা যাওয়ার পর দু'বেলা খাবার জোগাড় করাই তার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ সেও পড়াশোনা করে ৷ অন্য বন্ধুদের মতো আরামে থাকার স্বপ্ন দেখে ৷ কিন্তু আর পাঁচজনের মতো স্বাচ্ছন্দ্যে বাঁচার অনুমতি নেই তার ৷ ঘরে ছোটো ছোটো ভাইবোন আছে ৷ তার উপর দিদিদের পড়াশোনার খরচ ৷ সংসারের ভার তার ছোট্ট কাঁধে৷ হাতের মুঠোয় লটারির টিকিট নিয়ে জীবন সংগ্রামের রাস্তায় নেমে পড়েছে মাথাভাঙার পার্থ ৷ এখন লটারি টিকিট বেচেই দু'বেলা অন্ন জোগায় পরিবারকে ৷

পার্থ চক্রবর্তী ৷ বাড়ি কোচবিহারের মাথাভাঙার গোপালপুর গ্রামে ৷ শ্রাবণ মাসে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয় বাবার ৷ সংসারে এখন সাতজন ৷ তার মাঝে দিদি, ভাইদের পড়াশোনার খরচ ৷ কিন্তু রোজগার করার কেউ নেই ৷ অগত্যা সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে পার্থ ৷ নিজে ক্লাস সিক্সে পড়ে ৷ তবে পড়াশোনা আপাতত শিকেয় উঠেছে ৷ সপ্তাহে দু'দিন স্কুলে যায় সে । কারণ টিকিট বিক্রি করে আর সময় মেলে না ৷ আগে সংসারকে দেখতে হবে ৷ দু'বেলা ছোটো ছোটো ভাইবোনকে খাওয়াতে হবে ৷ তাদের ওষুধপত্র জোগাতে হবে ৷ এই পরিস্থিতিতে লটারি টিকিট বেচেই সংসার চালাচ্ছে পার্থ ৷ সকাল হলেই লটারি টিকিট নিয়ে বেরিয়ে যায় ৷ দিনভর টিকিট বেচে যা রোজগার হয়, তাই দিয়েই দু'বেলার ভাত জোগায় পরিবারকে ৷

দিনভর লটারি বেচে পার্থ

পার্থর মা গীতা চক্রবর্তী বলেন, "কী ভাবে সংসার চালাব বুঝতে পারছি না ৷ ছেলেদের পড়াশোনা চালাতে হচ্ছে ৷ অনেক আবেদন করেছি ৷ কিন্তু কেউ কিছু কানে নেয় না ৷ BDO-র কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ৷ কিন্তু তিন চার মাস হল কোনও সাহায্য মেলেনি ৷" যদিও এই বিষয়ে স্থানীয় গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মালতি বর্মণের বক্তব্য, পুরো বিষয়টাই জানি ৷ আমি ওদের BDO অফিসে পাঠিয়েছিলাম ৷ অঞ্চলের থেকে ফর্ম ফিলাপের কথা বলেছি ৷ জবকার্ড, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনায় বাড়ি সমস্ত কিছু দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি ৷"

দেখুন ভিডিয়ো

আপাতত লড়াই জারি পার্থর ৷ রোজ সকাল হলেই গোপালপুরের মেঠো পথে লটারির টিকিট নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে ৷ জানে না নিজের ভাগ্যের শিকে কবে ছিঁড়বে ৷ আপাতত সরকারি প্রতিশ্রুতি আর রোজকার জীবন সংগ্রামের ভরসাতেই বেঁচে ছোট্ট পার্থর ভালো করে বাঁচার স্বপ্ন ৷

Last Updated : Nov 8, 2019, 3:23 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details