পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বিশ্ব পরিবেশ দিবস: ঘরে-বাইরে দূষণে সুস্থ থাকবেন কীভাবে?

দূষণের কারণে কী ধরনের রোগ হতে পারে? কীভাবে দূষণকে টেক্কা দিয়েও নিজেকে সুস্থ রাখা যেতে পারে ? জানালেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর চিকিৎসক মৌসুমি দত্ত ।

By

Published : Jun 5, 2019, 2:58 PM IST

Updated : Jun 5, 2019, 3:03 PM IST

ছবি সৌজন্য: PIXABAY

কলকাতা, 5 জুন: আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস । এবছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম 'বায়দূষণ'। চলতি বছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, কলকাতায় বায়ুদূষণের মাত্রা বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে । দেশের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলির মধ্যে কলকাতার নাম প্রথম সারিতে রয়েছে । কিন্তু প্রশ্ন তাতেও কি আমাদের টনক নড়েছে ?

তবে এই দূষণকে টেক্কা দিয়েও কীভাবে নিজেকে সুস্থ রাখা যায়?

কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর চিকিৎসক মৌসুমি দত্ত জানান, এই সমস্যার কোনও সমাধান নেই । কারণ পরিবেশকে বদলে ফেলা সম্ভব নয় । পরিস্থিতি আগামীদিনে আরও খারাপের দিকেই যাচ্ছে । সচেতনা তৈরি করা জরুরি । কিন্তু সেটাও একদিনে সম্ভব নয় । নিজেকে বাঁচাতে ব্যক্তিগত অভ্যাসগুলো বন্ধ করতে হবে । যেমন, ধূমপান, তামাকের ব্যবহার বন্ধ করা প্রয়োজন । অ্যালকোহলের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে । প্রতিদিন যোগব্যয়াম করতে হবে । ফিজিক্যালি অ্যাকটিভ থাকার চেষ্টা করতে হবে । বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে হবে । ফলে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডান্ট রয়েছে । তাই নিয়মিত ফল খাওয়া শরীরের জন্য ভালো । ফল শরীরের মধ্যে যে টক্সিন তৈরি হয় সেগুলি বের করে দিতে পারে । বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি হলে মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে ।

কী ধরনের মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে ?

ভিডিয়োয় শুনুন চিকিৎসক মৌসুমি দত্তের বক্তব্য

চিকিৎসক মৌসুমি দত্ত জানান, H১N১ (সোয়াইন ফ্লু)-র ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য যে ধরনের মাস্ক ব্যবহার করা হয় সেগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে অন্য যে কোনও মাস্ক কিছুটা প্রোটেকশন দেয় । মাস্ক ছাড়াও রুমাল ব্যবহার করা যেতে পারে । তাতেও কাজ হবে । কারণ ছোট ছোট ধূলিকণা আটকানো প্রয়োজন । একটু বড় ধূলিকণা কম ক্ষতিকারক ।

দিন দিন পরিবেশ দূষণের মাত্রা বাড়ছে । এর ফলে কোন কোন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে ?


মৌসুমি জানান, বাড়ির বাইরে যাঁরা কাজে বেরোচ্ছেন তাঁরা বাইরের দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন । যাঁরা বাড়িতে রয়েছেন তাঁরাও দূষণের শিকার । দু'ক্ষেত্রেই বায়ু দূষণ, নাক থেকে শুরু করে ফুসফুসের গভীরতম অংশ অবধি ক্ষতি করতে পারে । এ জন্য মূলত যে অসুখটি হয়ে থাকে তাকে বলা হয় COPD (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজ়িজ)। এর জেরে মূলত ফুসফুস প্রভাবিত হয় । শ্বাস নিতে কষ্ট হয় । রোগীর কর্মক্ষমতা কমে যায় । বাতাসের মধ্যে থাকা খুব ছোট ধূলিকণা এক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতিকর । এছাড়া বায়ুদূষণের কারণে চোখ জ্বালা করতে পারে । অ্যালার্জি হতে পারে ।

শব্দদূষণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, অতিরিক্ত শব্দ দূষণে কানের ক্ষতি হয় । কানের পর্দা পর্যন্ত ফেটে যেতে পারে ।

জলদূষণ প্রসঙ্গে মৌসুমি জানান, জল দূষণের মাধ্যমে নানান জলবাহিত রোগ ছড়ায় । জন্ডিস হতে পারে। পেটের নানা রোগ হতে পারে। জলের মধ্যে নানারকম রাসায়নিক মিশে থাকলে তা থেকেও রোগ হতে পারে।


দূষিত পরিবেশের কারণে সব থেকে বেশি কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে?

মৌসুমি জানান, মূলত ফুসফুসের রোগ । যাঁদের অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁরা কনজাংটিভাল অ্যালার্জিতে ভুগতে পারেন । এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে ।

প্লাস্টিকের দূষণে কীভাবে ক্ষতি হতে পারে?

মৌসুমি জানান, প্লাস্টিকের বোতলে জল রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে খুব ঠান্ডা বা খুব গরম জল যেন না রাখা হয় । মাইক্রোওভেনে প্লাস্টিকের পাত্র গরম করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে । কিন্তু রান্না করার জন্য নয় । ঠান্ডা জল ফ্রিজে রাখার জন্য প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করা উচিত নয় । এক্ষেত্রে মেটালের পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে । যতটা সম্ভব কম প্লাস্টিকের ব্যবহার করতে হবে । প্লাস্টিকের বিভিন্ন ধরন আছে । কিছু প্লাস্টিক তুলনামূলকভাবে সুরক্ষিত । সেগুলি বার বার ব্যবহার করা যায়।

Last Updated : Jun 5, 2019, 3:03 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details