কলকাতা, 31 মার্চ: "মারব না। এমন দৌড় করাব, এমন দৌড় করাব, হাঁফিয়ে উঠে আত্মহত্যা করার জায়গা খুঁজে পাবে না। আজ এই ভাষাতেই প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন যাদবপুর লোকসভা আসনের CPI(M) প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
আজ টালিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় প্রচারের সময় তিনি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেল খাটবেন বলেও দাবি করেন তিনি। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রচারে বেরিয়েছিলেন বিকাশরঞ্জন। আজ তিনি টালিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার স্থানীয় মানুষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। নাগরিকদের সমস্যার কথা শোনেন। এলাকার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে প্রচার সারেন। কয়েকজনের বাড়িতেও যান। মূলত নির্ভয়ে ভোট দিতে যাওয়ার আবেদন জানান তাঁরা।
তৃণমূলের নাম করে বিকাশবাবু বলেন, "কিছু সংগঠন আছে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। মানুষের রায়কে ভয় পায়। চোর, জোচ্চর, গুন্ডারা এখন রাজনীতিতে ঢুকে গেছে। তারা রাজনীতির পাশাপাশি দেশকেও কলুষিত করছে। সংবিধানকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে। লাখ লাখ মানুষ সংগঠিত হলে ভয় পায় চোর, জোচ্চর, গুন্ডারা।" ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "পরিবর্তনের স্বাদ পেতে মানুষ লোভ করে ভুল করেছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চোর। আমার কথা কেউ শোনেনি সেদিন। এরপর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিল তদন্তের। তদন্তের ভয়ে রাস্তায় বসে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর চ্যালা-চামুন্ডারা। তদন্তের পরে তৃণমূলের রাজনৈতিক গুন্ডারা জেলে গেলেন। তাঁরা মানুষের টাকা লুট করেছেন।"
ভিডিয়োয় শুনুন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর বক্তব্য বামেদের সফল ব্রিগেড সমাবেশের কথা উল্লেখ করে বিকাশবাবু বলেন, "তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ সরকারি গুন্ডারা ভরাট করতে পারেনি। বামফ্রন্টের ব্রিগেড দেখে ভয় পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাটক করলেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন ঘুমিয়ে থাকার পর বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশের বিকেলেই পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের জন্য জেরা করতে গেল। আর তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজীব কুমারকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় বসলেন।" ভয় পেয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধরনায় বসেছিলেন বলে দাবি করেন বিকাশ ভট্টাচার্য। তাঁর মন্তব্য, পুলিশ কমিশনারকে বাঁচানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেছেন তাতে পুলিশ কমিশনারের জেল হবে কি হবে না বড় কথা নয়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলে যাবেনই। যতদিন আইন ব্যবস্থা রয়েছে এবং বামপন্থীরা রয়েছে ততদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেহাই পাবেন না।"
বামপন্থীদের দেওয়াল লিখনের সময় শাসকদলের পক্ষ থেকে আক্রমণের অভিযোগ তুলে বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, "মারব না। দৌড় করাব। তৃণমূল কংগ্রেসকে আমরা ভয় পাই না। আমরা নেত্রীকে মারব না। কিন্তু দৌড় করাব। তিনি এখনও দৌড়াচ্ছেন। ভাইপো ধরা পড়ে গেছে। তার বউ সোনা নিয়ে নাজেহাল। সুজনকে নোটিশ পাঠিয়েছে। কোর্টে গেলে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাব। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি যদি মানুষ প্রয়োগ করতে না পারে তার ফল হবে ভয়ানক। এমন দৌড় করাব যে দেশ ছেড়ে পালিয়েও বাঁচবেন না। হাঁফিয়ে যাবেন কেউ জল তুলে দেবে না। আত্মহত্যা করার জায়গা পাবেন না। ততদিন আপনাদের জেলে যেতে হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার করুন। আপত্তি নেই। কিন্তু প্রচারে বাধা বা ভোট দিতে বাধা দিলে তার পরিণতি খারাপ হবে।"