শান্তিনিকেতন, 2 সেপ্টেম্বর : অসুস্থ হয়েছেন উপাচার্য । খবর পেয়ে বিশ্বভারতীর নিজস্ব পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে দু'জন চিকিৎসক ও নার্স আসেন উপাচার্যের বাসভবন পূর্বিতা । পড়ুয়াদের তরফে দাবি করা হয়, উপাচার্য অসুস্থ কিনা জানতে চিকিৎসকদের সঙ্গে দু'জন ছাত্র প্রতিনিধি যাবেন ৷ নিরাপত্তারক্ষীরা পড়ুয়াদের এই দাবি মানতে না চাওয়ায় ফিরে যেতে হয় চিকিৎসকদের । যদিও চিকিৎসকদের অভিযোগ, উপাচার্যের বাসভবনে পড়ুয়ারাই তাঁদের ঢুকতে বাধা দিয়েছেন । পাল্টা পড়ুয়াদের অভিযোগ, নিরাপত্তারক্ষীরা চিকিৎসকদের উপাচার্যের বাসভবনের ঢুকতে বাধা দিয়েছেন । পড়ুয়ারা জানায়, সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক এনে উপাচার্যের চিকিৎসা করাবেন তাঁরা ।
চিকিৎসক অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় বলেন, "পড়ুয়ারা ঢুকতে বাধা দিলেন । উপাচার্য অসুস্থ বলে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল । ঢুকতে না দেওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে ।" পাল্টা পড়ুয়াদের মধ্যে সোমনাথ সৌ ও চৈতি নাথ বলেন, "আমরা বাধা দিইনি । আমরা শুধু বলেছিলাম দু'জন ছাত্র প্রতিনিধি চিকিৎসকদের সঙ্গে যাবেন । উপাচার্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের বলে রেখেছেন চিকিৎসকদের ঢুকতে দিতে না । ছাত্রদের উপর দায় চাপিয়ে দিতে চাইছেন । নিরাপত্তারক্ষীরা উপাচার্যের চিকিৎসা করাচ্ছেন না । আমরা সরকারি চিকিৎসক এনে উপাচার্যের চিকিৎসা করাব ।"
পড়ুয়াদের প্রতিনিধিরাও দেখতে যেতে চাইলে আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা ৷ তাই উপাচার্যকে না দেখেই ফিরে যেতে হয় চিকিৎসকদের ৷ ঠিকমতো খাবার পাচ্ছি না বলে প্রধানমন্ত্রী তথা আচার্য নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী । তারপরই উপাচার্যকে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা । এমনকি, বাড়ির সামনে বিশৃঙ্খলা এড়াতে রাজ্য সরকার কোনও রকম সহযোগিতা করছে না । এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । এইসবের মধ্যেই এদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন উপাচার্য । খবর দেওয়া বিশ্বভারতী নিজস্ব পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে । সেখান থেকে দু'জন চিকিৎসক-সহ 4 জন ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আসেন উপাচার্যের বাসভবনে । আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা চিকিৎসকদের জানান, দু'জন ছাত্র প্রতিনিধি তাঁদের সঙ্গে যাবেন উপাচার্যের শারীরিক অবস্থা কেমন রয়েছে তা দেখতে । কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা ছাত্র প্রতিনিধিদের ঢুকতে বাধা দেন । ফলে ফিরে যেতে হয় চিকিৎসকদেরও ।
27 অগস্ট রাত থেকে 6 দিন ধরে ঘেরাও রয়েছেন উপাচার্য । উত্তাল বিশ্বভারতী । গত এক বছরে 12 জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে । এছাড়াও অর্থনীতি বিভাগের দুই ছাত্র ও সঙ্গীত ভবনের এক ছাত্রীকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় । এরপরই উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী । উপাচার্যের বাড়ির সামনে অবস্থান মঞ্চ তৈরি করে অন্দোলন চালাচ্ছেন পড়ুয়ারা ।
আরও পড়ুন : Visva-Bharati University : পড়ুয়াদের সমর্থন অমর্ত্য সেনের পরিজনের, আচার্যকে চিঠি অধ্যাপকদের