বোলপুর, 29 মে:মণিপুরে জাতিগত আন্দোলন রূপ নিয়েছে জঙ্গি সংঘর্ষে ৷ চলছে গুলির লড়াই, মৃত্যুমিছিল, পুড়ছে বাড়ি । অগ্নিগর্ভ মণিপুর থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা ইটিভি ভারতকে ফোনে জানালেন স্থানীয় ইম্ফলের বাসিন্দা তথা বিশ্বভারতীর অধ্যাপক ওয়াইকুম হেমন্ত কুমার ৷ বিশ্বভারতীর আর এক অধ্যাপক কে সুনিতা দেবী শান্তিনিকেতনে বসে জন্মভূমির জন্য উদ্বিগ্ন । পরিজনদের সঙ্গে ফোনে রোজ কথা হলেও উদ্বেগ পিছু ছাড়ছে না তাঁর ৷ সেই অভিজ্ঞতার কথাই দুঃখের সঙ্গে ইটিভি ভারতের সঙ্গে শেয়ার করলেন তিনি ৷
মণিপুর রাজ্যে তপশিলি উপজাতির মর্যাদার দাবিতে সরব মেইতি সম্প্রদায়ের মানুষজন । এই দাবির প্রতিবাদে পার্বত্য জেলাগুলিতে 'উপজাতি সংহতি মার্চ' সংগঠিত হয় ৷ এরপরেই মণিপুরে শুরু হয় জাতিগত সংঘর্ষ । মেইতি সম্প্রদায়ের বিরোধিতা করে কুকি-সহ বেশ কয়েকটি আদিবাসী জনজাতি সম্প্রদায় । এই সংঘর্ষ ইতিমধ্যেই রূপ নিয়েছে জঙ্গি আন্দোলনে ।
25 দিনেরও বেশি সময় ধরে চলছে দুপক্ষের গুলির লড়াই ৷ কুকিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় মণিপুরের পার্বত্য জেলাগুলি তাদের দখলে । পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ গ্রামগুলিতে ৷ এখনও পর্যন্ত 75 জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৷ নামানো হয়েছে সেনা ৷ পুলিশ ও সেনার যৌথ অভিযানে 40 জন কুকিকে নিকেশ করা হয়েছে বলে জানান মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং ৷ বহু বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
অগ্নিগর্ভ মণিপুর থেকে সেখানকার পরিস্থিতির কথা ইটিভি ভারতকে জানালেন ইম্ফলের বাসিন্দা ওয়াইকুম হেমন্ত কুমার । তিনি বিশ্বভারতীর মণিপুরী নৃত্য বিভাগের অধ্যাপক । কর্মসূত্রে এখানেই থাকেন ৷ সদ্য গ্রীষ্মের ছুটি পড়ায় মণিপুরে গিয়েছেন ৷ সেখান থেকেই ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানান তিনি ৷
তিনি বলেন, "আমি খুব চিন্তায় ছিলাম ৷ গরমের ছুটি পড়তেই মণিপুর এসেছি । সম্পূর্ণ কারফিউ জারি আছে এখানে ৷ পরিস্থিতি ভালো নয় । পাহাড়ের কোলে থাকা ঘরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ৷ বাড়ি থেকে বেরোচ্ছি না ৷ গ্রামের দিকে বেশি সমস্যা হচ্ছে ৷ 200-রও বেশি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাহাড়ি অঞ্চলে লুকিয়ে লুকিয়ে কুকি উগ্রবাদী বন্দুকধারীরা সাধারণ মানুষকে টার্গেট করছে । পাহাড় থেকে নেমে এসে গ্রাম দখল করছে ওরা ৷ অবস্থা খুবই খারাপ ৷"