শেষকৃত্য সম্পন্ন হল বগটুই হত্যা-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের রামপুরহাট, 14 ডিসেম্বর: সিবিআই হেফাজতে বগটুই গণহত্যা-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুতে রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড় (Lalan Sheikh Death) ৷ লালনের পরিবার গতকাল প্রায় 5 ঘণ্টা ধরে 14 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ৷ পরিবারের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়, সিবিআইয়ের কয়েকজন অফিসার পঞ্চাশ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন, না-দিলে লালনকে প্রাণে মারারও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই বয়ানের ভিত্তিতে রামপুরহাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি। ইতিমধ্যেই সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর তদন্তভার সঁপে দেওয়া হয়েছে সিআইডি-র হাতে ৷ সিআইডি তদন্তের মধ্যেই বুধবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হল লালন শেখের ৷
সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে প্রশ্নও তোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তারপর মৃত লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবির অভিযোগের পরিপেক্ষিতে সিবিআইয়ের ডিআইজি, এসপি-সহ আরও সাত জন আধিকারিকের নামে 302-সহ 9টি ধারায় এফআইআর (FIR) করে মামলা রুজু করে রামপুরহাট থানা। 302 ধারায় খুন, 323-এ মারামারি ও 325 ধারায় গভীর আঘাত দিয়ে মারধর, 120B অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, 448 অনধিকার প্রবেশ, 509 মহিলার সম্মানহানি-সহ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগের মতো ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার তদন্তভার যায় সিআইডির কাছে। বুধবার রামপুরহাট থানায় আসেন সিআইডির একটি প্রতিনিধি দল।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের 21 মার্চ মাসে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বোমা মেরে খুন করা হয় এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে ৷ তিনি ছিলেন বগটুইয়ের বাসিন্দা ৷ তারপরই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে বগটুই গ্রাম। সেই খুনের বদলা নিতেই পালটা হামলা চালানো হয় ৷ রাতের অন্ধকারে গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ৷ মহিলা, শিশু-সহ 8 জনকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে । রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান আরও 2 জন। তাঁদের মধ্যে 7 জন একই পরিবারের সদস্য ছিলেন ৷ ঘটনার পর হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই'কে।
আরও পড়ুন:লালন শেখের মৃত্যুর প্রতিবাদে দুর্গাপুরে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প ঘেরাও
গত 20 জুন ভাদু শেখ খুন ও বগটুই হত্যা-কাণ্ডের জোড়া চার্জশিট রামপুরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করে সিবিআই। তাতে বগটুই হত্যা-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত হিসাবে ভাদু শেখের ছায়াসঙ্গী লালন শেখের নাম চার্জ শিটে পেশ করে। ঘটনার পর থেকে ফেরার থাকার প্রায় 7 মাস পর গত 4 ডিসেম্বর বিহার থেকে লালনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। আদালতের নির্দেশে হেফাজতে পেয়ে রামপুরহাটের অস্থায়ী ক্যাম্পে লালনকে রাখে সিবিআই। গত 12 ডিসেম্বর সিবিআই হেফাজতেই রহস্যমৃত্যু হয় বগটুই-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের। তারপর গত দু'দিন ধরে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে ওঠে। এদিন দুপুরে শান্তিপূর্ণভাবেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় লালন শেখের (Lalan Sheikh's Last Rites Completed)।