পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ বিশ্বভারতী - police allegedly inactive in vishva bharati university incident

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের মধ্যে শান্তিনিকেতন থানা ও বোলপুর মহিলা থানা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি । পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্য লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে । ক্ষতির টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় ৷ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয় কর্তৃপক্ষের তরফে ৷

surrounding wall broken in Visva-Bharati University
বিশ্বভারতীতে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে অশান্তি

By

Published : Aug 18, 2020, 7:31 AM IST

শান্তিনিকেতন, 18 অগাস্ট : পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় । এই মর্মে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার । প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ঘটনার পর পরই বিষয়টি বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে । এমনকী নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীও চাওয়া হয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে ।

ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়াকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই উত্তাল বিশ্বভারতী চত্বর । পাঁচিল দেওয়ার বিরোধিতা করে আগেই পথে নেমেছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, আশ্রমিক, রবীন্দ্র অনুরাগীদের একাংশ । তারপরেও নির্মাণকাজ চলতে থাকায় বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি এসে কাজে বাধা দেয় । বিশ্বভারতী ঠিকাদারের সঙ্গে শুরু হয় বচসা । ঠিকাদারকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে । বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণ কাজ । এই ঘটনার পর রবিবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে কর্মী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা একটি মিছিল করে শান্তিনিকেতন থানার সামনে জড়ো হন । মিছিলে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে আসেন উপাচার্য । উপাচার্য নির্দেশে ফের শুরু হয় পাঁচিল নির্মাণের কাজ । পৌষমেলার মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস তৈরি করে রাতারাতি শুরু হয় নির্মাণ কাজ ৷

গতকাল সকালে বোলপুর-শান্তিনিকেতন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ শান্তিনিকেতন থানার সামনে জড়ো হয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় । ভাঙচুর চালানো হয় অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস-সহ পৌষমেলার গেটে ৷ লুটপাট করা হয় নির্মাণ সামগ্রী । থানার সামনে এই ঘটনা ঘটলেও ঘটনাস্থানে দেখা যায়নি কোনও পুলিশ কর্মীকে । অভিযোগ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের । কর্তৃপক্ষের আরও অভিযোগ, পুলিশকে জানানো হলেও, পুলিশ আসেনি । পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় । এই মর্মে গতকাল একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার । যদিও জেলা পুলিশ সুপার শ্যামল সিংহ জানান, ঘটনার প্রেক্ষিতে আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।

পৌষমেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তাল বিশ্বভারতী চত্বর

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের মধ্যে দু'টি থানা (শান্তিনিকেতন থানা, বোলপুর মহিলা থানা) থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি । পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্য লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে । ক্ষতির টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় । যদিও জরুরি ভিত্তিতে কোনও কাজ ও ভরতি প্রক্রিয়া চলবে । প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এদিনের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে । জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রকেও । মন্ত্রকের তরফে একটি কমিটি গঠন করে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করবে ৷ সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে । মিছিলে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে আসায় উপাচার্যের দপ্তর থেকে চারজন নিরাপত্তারক্ষীকে তুলে নেয় রাজ্য সরকার । তাই নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে বিশ্বভারতীর তরফের আবেদন করা হয়েছে ।

বিশ্বভারতীর ঘটনায় গতকাল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ অন্যদিকে BJP-র তরফে ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের দিকে আঙ্গুল তোলা হয়েছে । পালটা বিশ্বভারতীতে এই ধরনের কোনও নির্মাণ হোক সেটা চায় না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সব মিলিয়ে বিশ্বভারতীর ঘটনা নিয়ে টানটান উত্তেজনা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details