কলকাতা, 11 মার্চ: লাভপুরের CPI(M) কর্মী হত্যা মামলায় মুকুল রায়ের আগাম জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট । এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে এই মামলার শুনানিতে মুকুল রায়ের গ্রেপ্তারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট । আজ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ মুকুল রায়ের আগাম জামিন মঞ্জুর করল । তবে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, 50 হাজার টাকার দুটি ব্যক্তিগত বন্ড জমা দিয়ে মুকুল রায়কে চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে । পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি লাভপুর ,শান্তিনিকেতন ,বোলপুর থানা অন্তর্গত অঞ্চলে কোনও ঢুকতে পারবেন না ।
মুকুল রায়ের আইনজীবীর বক্তব্য 2010 সালের 4 জুন লাভপুরের নবগ্রামে সালিশি সভায় তিন ভাইকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে মনিরুল ইসলাম ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে । সেই সময় মণিরুল ইসলাম ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক দলের নেতা । পুলিশ যে প্রাথমিক চার্জশিট পেশ করেছিল, সেখানে মণিরুল ইসলাম ও তাঁর ভাইয়ের নাম থাকলেও পরবর্তী সময়ে মণিরুল ইসলাম তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় চার্জশিট থেকে নাম বাদ যায় তাঁর । কুটুন শেখ, ধানু শেখ ও তুরুক শেখকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে লাভপুর মামলায় পুলিশ মোট 52 জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় ।
কুটুন শেখ, ধানু শেখ ও তুরুক শেখের মা বিচারের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে কোর্ট পুনরায় এই মামলার তদন্তের নির্দেশ দেয় ৷ এই মামলায় 4 ডিসেম্বর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । হত্যায় মণিরুল ইসলামের এবং হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নামও যুক্ত হয় চার্জশিটে । এর পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন মুকুল রায় । তাঁর আইনজীবী সন্দীপন গাঙ্গুলীর দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তার মক্কেলের নাম জড়ানো হয়েছে । মামলার শুনানিতে তিনি বলেন,‘‘ 2010 সালের ঘটনা । 2014 সালে যখন প্রথম চার্জশিট পেশ হয়েছিল সেখানে কোথাও মুকুল রায়ের নাম ছিল না । কিন্তু নতুন করে 2019 সালের 4 ডিসেম্বর যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে তাতে তার নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ।’’
রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি শাশ্বত গোপাল মুখার্জি বলেন,‘‘ লাভপুর এবং বোলপুরে একাধিক সাক্ষী রয়েছে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে । ফলে এই মামলার আরও তদন্তের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করছি ।’’ দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ডিভিশন বেঞ্চ বড়দিনের ছুটির আগে গ্রেপ্তারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেন । আজ আবার এই মামলার শুনানি ছিল । সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ডিভিশন বেঞ্চ মুকুল রায়ের আগাম জামিন মঞ্জুর করে ।