তারাপীঠ, 8 সেপ্টেম্বর: প্রখ্যাত সাধকেরা সিদ্ধিলাভ করায় 'সিদ্ধপীঠ' হিসাবে পরিচিত বীরভূমের তারাপীঠ । বশিষ্ঠমুনি থেকে শুরু করে সাধক বামাক্ষ্যাপার অলৌকিক কাহিনীতে পূর্ণ মা তারার এই প্রাঙ্গণ ৷ ঐতিহ্যবাহী তারাপীঠে যে মানুষজন শুধু ভক্তির টানেই ছুটে আসেন তা নয় । ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইতিহাসের টানেও এখানে ছুটে আসেন অনেকেই ৷ দেবীর আবির্ভাব ও পৌরাণিক কাহিনি বর্ণিত আছে তারাপীঠের অঙ্গে অঙ্গে ।
কথিত আছে, ব্রহ্মার সপ্তম মানসপুত্র ছিলেন বশিষ্ঠমুনি । তিনি সপ্তর্ষিদের মধ্যে একজন ছিলেন ৷ বীরভূমের এই তারাপীঠ শ্মশান সংলগ্ন স্থানে তিনি মাতৃ আরাধনায় দীর্ঘ তপস্যায় বসেছিলেন । তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী দুর্গা দেখা দেন । মাতৃগর্ভে তাঁর জন্ম হয়নি বলে বর হিসাবে বশিষ্ঠমুনি দেবীকে মাতৃরূপে দেখা দেওয়ার নিবেদন করেছিলেন । সমুদ্র মন্থনের সময় নীলকণ্ঠ পান করে মহাদেব শিথিল হয়ে পড়েছিলেন ৷ দেবী দুর্গা মা তারা রূপে মহাদেবকে স্তন্যপান করিয়েছিলেন ৷ শুক্লা চতুর্দশীর দিন সেই মা তারা রূপেই বশিষ্ঠমুনিকে দেখা দিয়েছিলেন তিনি ৷ সেই থেকে এই স্থানের নাম হয় তারাপীঠ । তবে আরও বিভিন্ন মত রয়েছে । বলা হয়, বিষ্ণুর চক্রে সতীর দেহ যখন খণ্ড খণ্ড হয়ে গিয়েছিল, সেই সময় চোখের মণি বা তারা এখানে পড়েছিল ৷ এর বাইরেও আরও পৌরাণিক মত রয়েছে ।
তবে বর্তমানে তারাপীঠে তারা মায়ের মন্দিরটি 1818 সালে বীরভূমের মল্লারপুরের জমিদার জগন্নাথ রায় নির্মাণ করেছিলেন । এই তারাপীঠ আরও খ্যাতিলাভ করে সাধক বামাক্ষ্যাপার ভক্তি ও অলৌকিক কাহিনী সমূহের মধ্যে দিয়ে ৷ 1837 সালে তারাপীঠ সংলগ্ন আটলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বামাচরণ চট্টোপাধ্যায় । এই তারাপীঠে দ্বারকা নদীর তীরে সাধনা করে তিনি সিদ্ধিলাভ করেন ৷ তারাপীঠে মা তারার দর্শন করতে গেলে 'সাধক বামাক্ষ্যাপার' জন্মভিটে দর্শন না করে ফেরেন না ভক্তরা ।
আরও পড়ুন:কৌশিকী অমাবস্যার আগে তারাপীঠে নিষিদ্ধ অনলাইনে পুজো