পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Bolpur HS Examinee: বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে উচ্চমাধ্যমিক দিল মেয়ে, ফিরে করল মুখাগ্নি - Daughter Lost Father During HS Examination

ভোরবেলায় বাবার মৃত্যু হয়েছে ৷ বাবার দেহ রেখেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় (HS Examination 2023) বসল মেয়ে। পরীক্ষা দিয়ে ফিরে এসে বাবার মুখাগ্নিও করল সে ৷ কুর্নিশ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার ৷

Bolpur HS Examinee
বাবার দেহ রেখে উচ্চমাধ্যমিক দিল মেয়ে

By

Published : Mar 16, 2023, 4:58 PM IST

বাবার দেহ রেখে উচ্চমাধ্যমিক দিল মেয়ে

বোলপুর, 16 মার্চ: বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিল মেয়ে (Daughter Lost Father During HS Exam)। পরীক্ষা শেষে শ্মশানে গিয়ে মুখাগ্নিও করল সে ৷ এদিন উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। আর ভোর 4টেয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বাবার ৷ শোকে বিহ্বল হয়েই প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছয় মৌসুমী দলুই ৷

বোলপুর পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডের মকরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন অষ্টম দলুই (40)। এদিন ভোর 4টেয় বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বোলপুর নেতাজি বাজারে চায়ের দোকান চালিয়েই স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার চলত দলুই পরিবারের। বড় মেয়ে মৌসুমী দলুই পারুলডাঙা শিক্ষানিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। উচ্চমাধ্যমিকে তার পরীক্ষাকেন্দ্র বোলপুর শৈলবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনরা ৷ দুঃস্থ বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়ে যেন ভালো করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় ও ফল ভালো হয় ৷ তাই শোক উপেক্ষা করে নিজেকে শক্ত করে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছয় মৌসুমী। বাকি সকলের মতই স্বাভাবিক নিয়মে ইংরাজি পরীক্ষা দেয় সে ৷

অন্যদিকে, ভুবনডাঙার শুকনগর শ্মশানে শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় অষ্টম দলুইয়ের দেহ ৷ শ্মশানে দেহ নামিয়ে পরিজন-প্রতিবেশীরা অপেক্ষা করতে থাকে মৌসুমীর ৷ বাড়ির বড় মেয়ে সে ৷ তাই বাবার মুখাগ্নি তাকেই করতে হবে ৷ পরীক্ষা শেষে শ্মশানে এসে বাবার মুখাগ্নি সারে মৌসুমী। এমনই মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বোলপুর ৷ এখনও উচ্চমাধ্যমিকের আরও 4টে পরীক্ষা বাকি ৷ বাকি পরীক্ষাগুলোটেও স্বাভাবিক নিয়মে বসবে সে। মৌসুমী বলে, "এর আগেও বাবার দু'বার স্ট্রোক হয়েছিল। তৃতীয়বার বাবা মারা গেল ৷ বাবা চাইত আমি যাতে ভালো করে পরীক্ষা দিই। তাই পরীক্ষা দিলাম, পরীক্ষা ভালো হয়েছে।"

আরও পড়ুন:ট্রেন বাতিলে বিপাকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা, শিয়ালদায় বিক্ষোভ এসএফআইয়ের

মৌসুমীর কাকা সুভাষ দলুই বলেন, "পড়াশোনা আগে ৷ তাই বাবার মৃতদেহ রেখেই ও পরীক্ষা দিতে গিয়েছে। খুবই মর্মান্তিক! আমাকে মৌসুমী জিজ্ঞাসা করল কাকা কী করব? আমরা সবাই ওকে পরীক্ষা দিতে পাঠালাম। মেয়ে পড়াশোনা করুক সেই ইচ্ছে ছিল দাদার।" শৈলবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রুবি ঘোষ বলেন, "জীবনের সবচেয়ে বড় মানুষটি চলে গিয়েছে তাও সে পরীক্ষা দিতে এসেছে। খুব শক্ত মনের পরিচয়ের জন্য ওকে আমরা কুর্নিশ জানাই ৷ আমরাও মেয়েটির সমস্ত রকম খেয়াল রেখেছি।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details