13 বছর পর গ্রামে ফিরলেন নিহতদের পরিজনরা লাভপুর, 2 মে: হাইকোর্টের নির্দেশে 13 বছর গ্রামে ফিরল লাভপুরের স্বজনহারা পরিবার ৷ 2010 সালে বালির ঘাটের দখলকারীকে কেন্দ্র করে বাড়ির উঠোনে তিন জনকে পিটিয়ে মেরে দেওয়া হয়েছিল ৷ যে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে মণিরুল ইসলামের ৷ তারপর থেকে গ্রামছাড়া ছিলেন নিহতদের পরিজন।
লাভপুরের দ্বারকা গ্রাম পঞ্চায়েতের বুনিয়াডাঙা গ্রামে ময়ূরাক্ষী নদীর বালির ঘাট কার দখলে থাকবে এই নিয়ে অশান্তি ছিল ৷ অভিযোগ, এই অশান্তির অবসানের জন্য 2010 সালের 8 জুন গ্রামে একটি সালিশি সভা বসে ৷ এই সভায় বচসা থেকে শুরু হয় দু'পক্ষের হাতাহাতি। বাড়ির উঠোনেই পিটিয়ে মেরে দেওয়া হয় ধানু শেখ, কটুন শেখ, ও ইসুদ্দিন শেখ নামে তিন জনকে ৷ এই ঘটনায় মণিরুল ইসলাম-সহ 51 জনের নামে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সানোয়ার শেখ ৷ সেই সময় মণিরুল ইসলাম ফরওয়ার্ড ব্লকের উপপ্রধান ছিলেন ৷ পরে তিনি অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। দলের টিকিট নিয়ে লাভপুর বিধানসভা থেকে জয়ী হন তিনি ৷
তবে একই পরিবারের তিন জন খুনের ঘটনার পর থেকেই ভয়ে গ্রামছাড়া ছিলেন নিহতের পরিজন ৷ এতকাল কেউ ছিলেন মুর্শিদাবাদের কুলিতে, কেউ ছিলেন বর্ধমানের গুসকরাতে, কেউ তো আবার লাভপুরের কুনুটিয়া গ্রামে ৷ প্রসঙ্গত, তৃণমূলের বিধায়ক হওয়ার পর দলের একটি জনসভা থেকে এই মণিরুল ইসলাম প্রকাশ্যে বলেছিলেন, পায়ের তলা দিয়ে তিন জনকে পিষে মেরেছি।" যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। মণিরুল ইসালামের দাপটে বোলপুর মহকুমা আদালতে মূল অভিযুক্ত থাকার পরেও চার্জশিট থেকে নাম বাদ যায় তাঁর ৷
আরও পড়ুন:খুনি মণিরুল হটাও, বিজেপি বাঁচাও; লাভপুরে বিজেপি কার্যালয়ে পোস্টার
বর্তমানে মণিরুল বিজেপিতে রয়েছেন ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে ফের এই মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিয়ে নাম সংযোজন করা হয়েছে। 2014 সালে এই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত ৷ 13 বছর পর হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রামের বাড়িতে ফিরলেন নিহতের পরিজনরা ৷ পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে এদিন ফেরানো হয়েছে ৷ এতকাল পর গ্রামে ফিরে খুশি নিহতদের পরিজনরা। গ্রামে ফেরার পর মালতি বিবি, সাবিনা বিবি বলেন, "এতকাল পরে ঘরে ফিরে ভালো লাগছে ৷ তবে সেই দিনের স্মৃতি ভোলার নয় ৷ পুলিশ তখন ওদের হয়ে কথা বলত ৷ অত্যাচার করেছিল। আতঙ্কে আমরা যে যার মতো আত্মীয়দের বাড়িতে পালিয়ে ছিলাম ৷ আজ 13 বছর পর ফিরলাম।"