শান্তিনিকেতন, 30 জুন :জমি মাফিয়াদের হাত থেকে শান্তিনিকেতনের কোপাই নদীকে বাঁচাতে বদ্ধপরিকর প্রশাসন ৷ ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে একথা জানালেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক সঞ্জয় রায় ৷ বুধবার কোপাই নদীর তীর বরাবর এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি ৷ সঙ্গে ছিলেন অন্য আধিকারিকরাও ৷
কোপাই নদীর ‘জমি’ চুরির অভিযোগ নতুন নয় ৷ স্থানীয় আদিবাসীরা এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব ৷ ইদানীংকালের শান্তিনিকেতনে জমির চাহিদা বেড়েছে ৷ সেই কারণেই নদীবক্ষ ভরাট করা অবৈধ নির্মাণ করা হচ্ছে ৷ নদীর পাড় ঘিরে ফেলা হচ্ছে কাঁটাতারের বেড়ায় ৷ গত কয়েক দিন ধরে এই নিয়ে লাগাতার খবর করে চলেছে ইটিভি ভারত ৷ সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই টনক নড়েছে প্রশাসনের ৷
আরও পড়ুন :খবরের জেরে কোপাই বাঁচাতে ঝাঁপাল প্রশাসন, দখল হঠিয়ে লাগানো হবে গাছ
গত সোমবার কোপাই চুরি নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছিল ইটিভি ভারতের পোর্টালে ৷ পরদিনই, অর্থাৎ মঙ্গলবার কোপাইয়ের তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন প্রশাসনের কর্তারা ৷ ডেকে পাঠানো হয় স্থানীয় পঞ্চায়েতের আধিকারিক ও উপপ্রধানকেও ৷ তখনই স্থির হয়, অবিলম্বে চুরি যাওয়া নদী পুনরুদ্ধার করা হবে ৷ নদীর তীরে লাগান হবে ফলের গাছ ৷ তৈরি করা হবে সবজির বাগান ৷
এরপর বুধবার ফের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা ৷ সেই সময়েই ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির মুখোমুখি হন দফতরের আধিকারিক সঞ্জয় রায় ৷ তিনি জানান, গোটা বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন ৷ নদী ও তার তীরবর্তী এলাকা সরকারি সম্পত্তি ৷ তা সাধারণের কেনা-বেচার জন্য নয় ৷ তারপরও যদি কেউ সেখানে নির্মাণ তৈরির চেষ্টা করে, তবে সেটা বেআইনি ৷ এমন কোনও কাজ হলে তাঁরা দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করবেন বলেও জানিয়েছেন সঞ্জয় ৷
জমি মাফিয়াদের হাত থেকে শান্তিনিকেতনের কোপাই নদীকে বাঁচাতে বদ্ধপরিকর প্রশাসন ৷ আরও পড়ুন :নদীবক্ষে পিলার, জমি হারাচ্ছে কোপাই
প্রশাসনের এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা ৷ তবে তাঁদের বক্তব্য, এতদিন ধরে যে অনিয়ম হচ্ছে, তা তো লুকিয়ে হচ্ছে না ৷ সকলের চোখের সামনেই হচ্ছে ৷ প্রশাসন সবটাই প্রথম থেকে জানত ৷ অথচ এতদিন তা নিয়ে কেউ টুঁ শব্দটি করেনি ৷ কেন ? এর উত্তর হল, প্রভাবশালী যোগ ৷ এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাটি মাফিয়াদের মাথায় হাত রয়েছে এই প্রভাবশালীদের ৷ সেই কারণেই এত অনিয়ম করেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছে তারা ৷
ঘটনার জন্য সরাসরি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকেই দায়ী করেছে বিরোধী বিজেপি ও সিপিআইএম ৷ তাদের সাফ কথা, শাসকদলের নেতা, কর্মীদের মদতেই লুট হচ্ছে নদী ৷ বিরোধীদের হুঁশিয়ারি, প্রশাসন অবিলম্বে পদক্ষেপ না করলে প্রয়োজনে এই ইস্যুতে আন্দোলনে নামবে তারা ৷