কলকাতা, 18 অগাস্ট : যতক্ষণ না বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন বন্ধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় ৷ বিভাগীয় প্রধান, প্রিন্সিপ্যাল এবং ডিরেক্টরদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ তবে ভরতি, পরীক্ষা এবং অন্য জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে ৷ বিশ্বভারতীর তরফে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে ৷
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ভাঙচুরে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ যাতে ভবিষ্যতে বিশ্বভারতীতে এধরনের ঘটনা আর না ঘটে ৷ এই ঘটনায় CBI তদন্তের অনুরোধ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষে ৷ আজ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে যথাস্থানে দাবি জানিয়েছে বলে খবর । তারপরেই এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)সক্রিয় হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সূত্রের খবর ED-র তরফে রাজ্য পুলিশের DGP, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং বীরভূম জেলা প্রশাসনের কাছে ঘটনা নিয়ে সবকটি FIR-এর কপি চাওয়া হয়েছে।
বিশ্বভারতীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া। গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ মোতাবেক ওই ঐতিহাসিক মাঠে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু হয় গতকাল। বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন ধরেই জলঘোলা হচ্ছিল। বিশ্বভারতীর মাঠে পাঁচিল দেওয়ার বিষয়টির বিরোধিতা চলছিল। গতকাল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হতেই এক বিধায়কের নেতৃত্বে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়।
অভিযোগ সেখান থেকেই পৌষ মেলায় মাঠের পাশের বিরোধী আন্দোলন হিংসাত্মক আকার নেয়। ভেঙে ফেলা হয় পাঁচিল। ভাঙা হয় এতিহ্যশালী গেট। বিশ্বভারতীতেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। থানার একেবারে লাগোয়া এলাকায় এত বড় ঘটনায় গতকাল পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে। যদিও আজ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় আপাতত বন্ধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোভাব যতক্ষণ পর্যন্ত না সব দোষীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে রাখা হবে। তাদের তরফে বিষয়টি নিয়ে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ জানানো হয় বলে খবর। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচটি FIR হয়েছে বলে জানিয়েছেন বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিং।
এই সবকটি FIR-এর কপি এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফে চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ED-র তরফে পাঠানো চিঠি নিয়ে নবান্নের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি । বীরভূম জেলা প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেননি বীরভূমের পুলিশ সুপার। তবে এনফর্সমেন্ট ডাইরেক্টেরের (ED) সূত্র জানাচ্ছে, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ED মূলত টাকা পয়সা দিয়ে ওই বিক্ষোভ সংগঠিত করা হয়েছিল কি না তা বুঝতে চাইছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে চলেছে বলে সূত্রের খবর।