বীরভূম, 11 এপ্রিল: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের প্রকল্প দেউচা-পাচামি ৷ কিন্তু এখানে কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ ও উচ্ছেদ রুখতে আন্দোলন শুরু করেছেন আদিবাসীরা ৷ রাজভবন অভিযান কর্মসূচিও নিয়েছেন তাঁরা ৷ মঙ্গলবার এই প্রতিবাদীরা বোলপুরে এসে পৌঁছন ৷ তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেই জমি বাঁচাতে মথুরাপাহাড়ি থেকে এই অভিযান শুরু করেছেন এই খনি প্রকল্পের বিরোধী স্থানীয় বাসিন্দারা । 14 এপ্রিল তাঁদের কলকাতায় পৌঁছনোর কথা ৷ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে দাবিপত্র তুলে দেবেন দেউচা-পাচামির আদিবাসী নেতারা ।
আমেরিকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলামুখ কয়লা খনি হতে চলেছে বীরভূমের দেউচা-পাচামিতে । এই দেউচা-পাচামি হল বীরভূমের মহম্মদবাজার হরিণ সিং কোল ব্লক । 3 হাজার 400 একর জমি নিয়ে 1 হাজার 178 মিলিয়ন হেক্টর কয়লা ব্লক রয়েছে এখানে । প্রায় 1 হাজার 148 মিলিয়ন হেক্টর ব্যাসল্ট শিলা জমা রয়েছে এখানে । এই 3 হাজার 400 একরের মধ্যে 1 হাজার একর সরকারি জমি । সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এই এলাকায় 12টি গ্রামে 4 হাজার 314টি বাড়িতে কমপক্ষে 21 হাজার মানুষ বাস করেন । যার মধ্যে 3 হাজার 600 জন তফশিলি জাতিভুক্ত ও 9 হাজার 34 জন তফসিলি উপজাতিভুক্ত৷
দেউচা-পাচামিতে প্রায় 35 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার ৷ এর মধ্যে 10 হাজার কোটি টাকা পুনর্বাসন প্যাকেজে খরচ করা হবে । এমনটাই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু, বিষয় হল এই খোলা মুখ কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য এত মানুষের বসতি অন্যত্র সরাতে হবে ৷ তা ছাড়াও ধ্বংস হবে পরিবেশও। বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি, চারণভূমি প্রভৃতি নষ্ট হয়ে যাবে ৷ তাই প্রথম থেকেই জমি না-দিতে চেয়ে খনি বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেউচা-পাচামির বাসিন্দারা ৷ যাদের মধ্যে অধিকাংশ আদিবাসী মানুষ। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, এই প্রজন্ম না হয় জমি দিয়ে সরকারের কাছে অর্থ ও চাকরি পাবে ৷ পরবর্তী প্রজন্মের কী হবে?