শান্তিনিকেতন, 27 ফেব্রুয়ারি : "সরকার বিরোধী" কার্যকলাপের জন্য বাংলাদেশি ছাত্রীকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক । আফসারা অনিকা মীম নামে ওই ছাত্রী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করেন । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে কলকাতার ফরেনারস' রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস আফসারাকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ পাঠিয়েছে ।
14 ফেব্রুয়ারি এই নির্দেশিকা পান আফসারা । নির্দেশিকা পাওয়ার 15 দিনের মধ্যে তাঁকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে । যদিও নির্দেশিকায় 'সরকার বিরোধী' কার্যকলাপের নির্দিষ্ট কোনও বিবরণ ছিল না ।
বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার বাসিন্দা আফসারা । 2018 সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজ়াইন কোর্সে স্নাতক স্তরে ভরতি হন । তাঁর এক বন্ধু জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসের 14 তারিখ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে তাঁকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয় । সেখানে উল্লেখ করা হয়, তিনি সরকার বিরোধী কার্যকলাপ করেছেন । তাঁকে নির্দেশিকা পাওয়ার 15 দিনের মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে । যদিও সরকার বিরোধী কাজ ঠিক কী তার উল্লেখ নির্দেশিকায় ছিল না ।
আফসারাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পাঠানো নির্দেশিকায় লেখা রয়েছে, "তাঁকে সরকার বিরোধী কাজ করতে দেখা গেছে । যা তাঁর ভিসা বিরোধী । এই বিদেশী ছাত্রী ভারতে থাকতে পারবেন না । এই নির্দেশিকা পাওয়ার 15দিনের মধ্যে তাঁকে ভারত ছেড়ে চলে যেতে হবে ।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের SFI সংগঠনের এক সদস্য সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী প্রতিবাদ হয় । সেই সম্পর্কিত কয়েকটি পোস্ট সোশাল মিডিয়ায় আফসারা শেয়ার করেছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে । এরপর তিনি সোশাল মিডিয়ায় ট্রোলড হন ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ জানান, ডিসেম্বরের ঘটনার পাশাপাশি 8 জানুয়ারি CAA, NRC বিরোধিতায় ক্যাম্পাসে বনধ ডেকেছিল বাম ছাত্র সংগঠনগুলি । সেই মতো বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিশ্বভারতীর বাম সমর্থক পড়ুয়ারা । সেই বিক্ষোভে সামিল হন আফসারা ।
এক বাংলাদেশের ছাত্রকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য ফোন করা হলে তিনি উত্তর দেননি । সংবাদসংস্থাকে হোয়াটস অ্যাপ মেসেজে জানিয়েছেন, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই । কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তারা এই বিষয়ে কোনও সরকারি ইঙ্গিত এখনও পায়নি । বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফেও এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি । বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা করে বলেন, এটি বিরোধী মতকে দমন করার একটি চেষ্টা ।