বোলপুর, 26 জানুয়ারি: জমি বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের কাছে আইনজীবীর চিঠি পাঠাবেন বলে জানালেন তিনি ৷ উপাচার্যের (Visva Bharati VC) ব্যবহার নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন অর্থনীতিবিদ ৷ পাশাপাশি, বিশ্বভারতীর সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ফের উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি (Amartya Sen Talks Tough)।
বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর পড়ুয়া-অধ্যাপকেরা 'প্রতীচী'র বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন অমর্ত্য সেনের সঙ্গে ৷ কথোপকথনে বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ভূমিকা নিয়ে নানা মন্তব্য করেন ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন । এছাড়াও হাসির ছলে তিনি বলেন, "দিল্লির কিছু লোকজন আছেন যাঁরা আমাকে পছন্দ করেন না ৷"
শান্তিনিকেতনের বাড়িতে বসে ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্বভারতীর শিক্ষার মান থেকে শুরু করে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ভূমিকা, পড়ুয়াদের বহিষ্কার প্রসঙ্গে তোপ দাগেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ । এরপরেই ফের জমি ফেরত চেয়ে তাঁকে চিঠি দেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । শান্তিনিকেতনের 'প্রতীচী' বাড়িতে 13 ডেসিম্যাল অতিরিক্ত জমি রয়েছে, যা বিশ্বভারতীর । সেই জমি ফেরত চাওয়া হয় ৷ প্রয়োজনে অমর্ত্য সেনের আইনজীবীর উপস্থিতিতে জমি জরিপের প্রস্তাবও দেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র ৷ তীব্র সমালোচনা করেছেন ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর-সহ পড়ুয়া-প্রাক্তনীরা ৷
এই নিয়ে এ দিন অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যান বিশ্বভারতীর পড়ুয়া-অধ্যাপকেরা ৷ বিশ্বভারতীর সামগ্রিক পরিস্থিতি ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কার্যকলাপ তুলে ধরেন তাঁরা ৷ নানা প্রশ্ন করে পড়ুয়া-অধ্যাপকদের কাছ থেকে বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি জানতে চান অমর্ত্য সেন ৷ এরপর তাঁর কাছে জমি চাওয়া প্রসঙ্গে মুখ খোলেন । কথোপকথনে অমর্ত্য সেন বলেন, "পরিস্থিতি নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত । কীভাবে এর সমাধান হবে ভেবে পাচ্ছি না । আমারও পিছনে লেগেছে ৷"
আরও পড়ুন:ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের পরই অমর্ত্য সেনকে জমি ফেরত চেয়ে বিতর্কে বিশ্বভারতী
অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, "দিল্লির কাছে ভালো হওয়ার জন্য তিনি (উপাচার্য) আপনার জমি ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ।" হাসি মুখে অমর্ত্য সেন বলেন, "হ্যাঁ, দিল্লির কিছু লোক আছেন যাঁরা আমাকে পছন্দ করেন না । আপনারা প্রতিবাদ করে যান । কী আর করা যাবে ।" কথোপকথন শেষে বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে অধ্যাপক অমর্ত্য সেন বলেন, "আমি বিমর্ষ হয়ে পড়ছি । চিন্তা ভাবনার অভাবটা কত বড় হতে পারে । এটা মনে করা কঠিন নয়, এখানে সুবিচার হচ্ছে, নাকি অবিচার হচ্ছে ।"
জমি প্রসঙ্গে প্রশ্নে তিনি বলেন, "কেউ যদি আপনার বাড়িতে এসে বলেন এটা আমার জমি ! আমরা তো সবাই বলতে পারি ৷ আমিও তো উপাচার্যের বাড়িতেই যেতে পারতাম । বলতাম এই ঘর, এটায় আমার পিতামহ থাকতেন ৷ কিছু লোককে আনিয়ে মাপতে চাই । কার কোন অংশ ৷ আমি তো বলতেই পারি । কিন্তু, সেটা তো আমি বলব না । বিষয় হচ্ছে, তিনি যে ব্যবহার করেন, অন্য কেউ সেটা করবেন না ৷ তবে উকিলের চিঠি একবার গিয়েছে । আরেকবার নিশ্চয়ই যাবে ।