বাঁকুড়া , 28 অগাস্ট : বাঁকুড়ার ওন্দা থানা এলাকার মাঝ বরাবর বয়ে গেছে দ্বারকেশ্বর নদ । এই নদের উপর দিয়ে প্রায় 30 হাজার মানুষের যাতায়াত । পারাপারের সেতুটি রয়েছে বাঁকুড়া শহরের কাছে এক্তেশ্বরে 60 নম্বর জাতীয় সড়কের উপর । তবে নদের উত্তর ও দক্ষিণ তীরের ওন্দা ব্লকের বাসিন্দাদের একটাই সমস্যা । এপার-ওপার করতে গেলে দুই কিলোমিটারের জায়গায় প্রায় 30 কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয় তাঁদের । ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ওন্দা ব্লকের বাসিন্দাদের ।
নদের উত্তর তীরে রয়েছে নিকুঞ্জপুর , ,গামিদ্যা, পাঁচাল, প্রতাপপুর, চাবড়া ঘাট সমেত বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকা । অন্যদিকে , দক্ষিণে রয়েছে ওন্দা , অযোধ্যা , জামতোড়া ইত্যাদি এলাকা । তাছাড়া , থানা , হাসপাতাল , স্টেশন , ব্লক অফিস বেশিরভাগটাই দক্ষিণ তীরে । সেক্ষেত্রে উত্তর পাড়ের বাসিন্দাদের হঠাৎ করে হাসপাতাল বা অন্য কাজে যেতে হলে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হয় । এছাড়া , তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর জন্য সারা বছর নদের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী রাস্তা বা সাঁকো তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই পারের মানুষকে যাতায়াত করতে হয় । কিন্তু বর্ষা এলেই প্রতিবছর এই অস্থায়ী রাস্তা এবং সাঁকো ভেঙ্গে যায় ফলে তখন চরম সংকটে পড়তে হয় দু'পাড়ের মানুষকে ।
দ্বারকেশ্বর নদে ব্রিজ, না হওয়ায় বিপাকে ওন্দা ব্লকের বাসিন্দারা... একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন , "খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে । যাতায়াত করতে দেরি হচ্ছে । জরুরি কোনও কাজ থাকলে তা সঠিক সময়ে করা যাচ্ছে না । তাড়াতাড়ি হাসপাতালে পৌঁছানোর প্রয়োজন হলে তাতে সমস্যা হচ্ছে । ছোটো সাঁকো বানিয়ে নৌকো করে পারাপার হতে হচ্ছে । "
এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয় বাসিন্দাদের বাসিন্দাদের দাবি ছিল , চাবড়া ঘাটে একটি পারাপারের সেতু তৈরি করে দেওয়া । 2016 সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এই দাবি আরও জোরালো হয় । শেষ পর্যন্ত এই ব্রিজটি তৈরির আবেদন অনুমোদিত হয় । 2018 সালে তার কাজও শুরু হয়ে যায় । ব্রিজটি মোট 20 টি পিলার দিয়ে তৈরি হওয়ার কথা । ব্রিজটির দৈর্ঘ্য হবে 455 মিটার । এর জন্য মোট 30 কোটি টাকা বরাদ্দ হয় । তবে কাজ শুরু হলেও কাজের গতি অত্যন্ত শ্লথ বলে অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা । যেভাবে কাজ চলছে , চলতি বছরেও শেষ হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা । ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে । এই প্রসঙ্গে এক স্থানীয়র বক্তব্য , " পাশে একটা নতুন ব্রিজ হচ্ছে । ব্রিজটা অনেকদিন আগেই শুরু হয়েছিল । কিন্তু কী কারণে কাজ বন্ধ হয়ে আছে জানিনা । এতদিন হয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল । এখান দিয়ে প্রায় 200-র বেশি মানুষ যাতায়াত করেন । যতদিন না পর্যন্ত ব্রিজ তৈরি হয় , এইভাবেই আমদের পারাপার করতে হবে । "
ব্রিজ তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে তাছাড়া , ব্রিজটি তৈরি হওয়ার পর ব্রিজ থেকে দক্ষিণ তীরে 60 নম্বর জাতীয় সড়ক পর্যন্ত যে রাস্তা হওয়ার কথা , তা জমি জটে আটকে রয়েছে । এই বিষয়ে জেলা প্রশাসন কিছু বলতে চায়নি । তবে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে , এই বছর নভেম্বর মাসে তা চালু হওয়ার কথা ছিল । তবে কোরোনার কারণে তা বন্ধ আছে । সেই কারণে নির্ধারিত সময় তা চালু হওয়া সম্ভব নয় ।