শুশুনিয়ার একাংশে জ্বলছে আগুন বাঁকুড়া, 11 মার্চ: বসন্তের পাতাঝরা মরশুমে জঙ্গলে আগুন লাগার প্রবণতা বাড়ছে বাঁকুড়ায়। গত কয়েক বছর ধরে জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই এই ছবিটাই ফিরে আসে বারবার। বনদফতরের (Forest Department) তরফে এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নিলেও সাফল্য আসেনি সেভাবে, এমনটাই খবর পাওয়া যাচ্ছে, স্থানীয় সূত্রে। তবে আগুন নাকি, রুটিরোজগারের জন্য লাগানো হচ্ছে বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার (Subhas Sarkar Reacts over Fire in Susunia Hill) ৷
গত এক মাসে শুশুনিয়া পাহাড় থেকে শুরু করে উত্তর বনবিভাগের ছাতনা, সোনামুখীর জঙ্গল, দক্ষিণ বনবিভাগের সিমলাপাল রেঞ্জের জামবনি-সহ একাধিক জঙ্গলে আগুন লাগার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে এই আগুন লাগার পিছনে কারণ কী সেই খবর প্রকাশ্যে না-এলেও ওই ঘটনায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য যে নষ্ট হচ্ছে তা মানছেন অনেকেই। যথেচ্ছভাবে জঙ্গলে আগুন লাগা বা লাগানোর ঘটনায় বহুমূল্য গাছপালা নষ্টের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের পশু, পাখি, সাপ, গোসাপ-সহ অন্যান্য জীবজন্তুর অকালমৃত্যু ঘটছে। কিন্তু বনদফতর জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা আটকাতে সেভাবে উদ্যোগী নয় বলেই অভিযোগ অনেকের।
ছাতনার উপরশোল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা লক্ষীকান্ত ঘোষ বলেন, "বনকর্মীর সংখ্যা যথেষ্ট কম, জঙ্গলে আগুন লাগার খবর পেলে আমরা গ্রামের মানুষই আগে বেরিয়ে আসি। কে বা কারা বারবার এভাবে জঙ্গলে আগুন লাগাচ্ছে খুঁজে বার করা হোক। স্থানীয় বিট অফিসারকে বারবার অনুরোধ করলেও একদিনের জন্যও তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেননি বলে তিনি অভিযোগ করেন।" এলাকার আরও এক বাসিন্দা স্বপন কুণ্ডু জানান, এই জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনার পিছনে কোনও অসাধু চক্র কাজ করছে। শুধু জঙ্গলে গাছ গাছালির ক্ষতি নয়, অনেক নিরীহ আর পরিবেশবান্ধব জীবজন্তু, পোকামাড় মারা যাচ্ছে। এই ঘটনা বন্ধের জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরি জরুরি বলে তিনি মনে করছেন ৷
আরও পড়ুন:পর্যটনের মরশুমে শুশুনিয়া রক্ষায় তৎপর পুলিশ-প্রশাসন
এ প্রসঙ্গে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, "জঙ্গলে ধারাবাহিক আগুন লাগার ঘটনায় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। এর পিছনে রুজিরোজগারের বিষয় আছে আর তা তদন্তের দরকার ৷ বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের ডিএফও ওমর ইমামকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "গত চার মাস বৃষ্টি হয়নি, সবকিছু শুকনো। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই। একদিকে জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চলছে, অন্যদিকে বনদফতরের পক্ষ থেকে আগুন নেভানোর বেশকিছু যন্ত্রপাতিও কেনা হয়েছে। শুশুনিয়ার মতো অনেক জায়গাতেই স্থানীয়দের সহযোগীতা পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরাও ভালো কাজ করছেন ৷"