বাঁকুড়া, 30 মে : লালমাটির জেলা বাঁকুড়া ৷ সেই বাঁকুড়া শহর থেকেই মাত্র 19 কিলোমিটার দূরে শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে পাথর শিল্পীদের ছোট্ট গ্রাম শুশুনিয়া ৷ ছেনি-হাতুড়ির আঁকিবুকি খেলায় শিল্পীদের হাতে সৃষ্টি হয় হাজারো ভাস্কর্য ৷ দেবদেবীর মূর্তি থেকে পাথরের থালা-বাটি ৷ শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় সেসব যেন অন্যমাত্রা পায় ৷ কিন্তু একবছর হতে চলল লকডাউনের জেরে ছবিটা অন্যরকম ৷ খাঁ খাঁ করছে দোকানগুলি ৷ না আছে পর্যটকদের ভিড়, না মিলছে সরকারি সাহায্য ৷ কার্যত লকডাউন যে ! এখন পাথর শিল্পের সঙ্গে জড়িত এই শিল্পীদের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা ৷
শুশুনিয়া অঞ্চলে পাথরকাটা শিল্পীদের বাস ৷ এক ইঞ্চির মূর্তি থেকে সাত ফুটের মূর্তি ৷ শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় সেগুলো যেন প্রাণ পায় ৷ তবে কেবল মূর্তি নয় , পাথরের হাজারো ভাস্কর্য তৈরি করেন তাঁরা ৷ রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত বেশকিছু শিল্পীও রয়েছেন এই গ্রামে ৷ শুশুনিয়া পাহাড় থেকে পাথর কেটে তৈরি হয় পাথরের দেবদেবীর মূর্তি , মডেল , থালা-বাটিসহ আরও কত কী ৷ পর্যটকরা বাঁকুড়ায় এসেছেন অথচ পাথরের জিনিস কেনেননি , এরকম পর্যটকের সংখ্যা হাতেগোনা ৷ খুঁটিতে লাল-নীল-সবুজ ত্রিপল খাটানো দোকানে পর্যটকের আশায় পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা ৷
শুশুনিয়ার দক্ষিণে পারুলিয়া গ্রামে পাথরের বাসনপত্র ও শিলনোড়া খুবই বিখ্যাত ৷ শীতেই মূলত ভিড় হয় ভ্রমণপিপীসুদের ৷ শিল্পীরা সারাবছর অপেক্ষা করে থাকেন কবে পর্যটকরা আসবেন , দুপয়সার জিনিস বিক্রি করে ঘরে কষ্টের টাকা নিয়ে যাবেন ৷ কিন্তু এখন সেসব অতীত ৷ না আছে পর্যটকের আনাগোনা ৷ না হচ্ছে তাঁদের বিক্রিবাটা ৷ প্রথমে লকডাউন ও পরে কার্যত লকডাউন ৷ দুইয়ের জেরে তাঁদের ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড় ৷ এখন খাঁ খাঁ করছে দোকানগুলি ৷ নিস্তব্ধ দোকানে এখন শুধু শোনা যায় পাথরের গায়ে শিল্পীদের ছেনি-হাতুড়ির ঠুকঠাক শব্দ ৷